নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন করতে ‘অভয়’ দিতে পথে নেমেছে অভিভাবক ফোরাম। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে জলপাইগুড়ি শহর জুড়ে মাইক নিয়ে প্রচার শুরু করেছেন ফোরামের সদস্যরা। টিউশনের কথা সরাসরি না বললেও রিকশায় মাইক বেঁধে ঘোষণা করা হচ্ছে, যে ভাবে এতদিন স্কুল শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের ‘সহযোগিতা’ করে এসেছেন, সেই ‘সহযোগিতা’ তাঁরা চালিয়ে যান। এই ক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষিকাদের বাধা দেওয়া হলে অভিভাবকরা শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াবে এবং রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবে বলে জানানো হয়েছে। স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানোর পক্ষে অভিভাবক ফোরামের দাবির পাল্টা হুমকি দিয়েছে বেঙ্গল প্রাইভেট টিউটরস আসোসিয়েশন। সংগঠনের সাধারন সম্পাদক সুজয় বর্মন বলেন, “যাঁরা প্রাইভেট টিউশন নিয়ে শহর জুড়ে মাইকিং করছেন, তাঁরা আইন অমান্য করছেন।, প্রয়োজনে তাঁদের বিরুদ্ধেই আমরা আদালতে যাব। শিক্ষক শিক্ষিকাদের সরকারি নির্দেশ মানতে হবে।” জলপাইগুড়ি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মৃণ্ময় ঘোষ বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনে স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশন পড়াতে পারবেন না।” অভিভাবক ফোরামের আন্দোলন এবং প্রাইভেটে পড়ানোর বিরুদ্ধে গৃহশিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে মৃণ্ময়বাবু বলেন, “কোনও আন্দোলনের বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী স্কুল শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না। তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।” স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকারা প্রাইভেট টিউশন করতে পারবে না বলে রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশ জারি করা হয়েছে। সেই নির্দেশকে হাতিয়ার করে স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশন পড়ানো বন্ধ করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে বেঙ্গল প্রাইভেট টিউটরস আসোসিয়েশন। ওই সংগঠনের চাপেই ক্ষেত্রমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে শোকজও করেছে স্কুলের পরিচালন সমিতি। শহর ও লাগোয়া এলাকার স্কুল শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশন করছেন কী না তা খতিয়ে দেখার কথা ঘোষণা করে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর। জলপাইগুড়ি শহরের স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশ (যাঁরা প্রাইভেট টিউশন পড়ান) গত সপ্তাহে বৈঠক করে প্রাইভেট টিউশন পড়াবেন না বলে অভিভাবকদের জানিয়ে দেন। এর পরেই স্কুল শিক্ষকদের ‘অভয়’ দিতে অভিভাবক ফোরাম পথে নেমেছে। ফোরামের দাবি, স্কুল শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশন পড়ানো বন্ধ করে দিলে আখেরে ছাত্রছাত্রীদেরই ক্ষতি হবে।
সংগঠনের কার্যকারী কমিটির সদস্য অসীম নন্দী বলেন, “স্কুলের পরিকাঠামোর অভাবে শিক্ষকরা সব ছাত্রছাত্রীদের প্রতি সমান মনোযোগ দিতে পারেন না। সেই কারণে প্রাইভেট টিউশন প্রয়োজন হয়। প্রাইভেট টিউশন বন্ধ হয়ে গেলে ছাত্র ছাত্রীদেরই ক্ষতি হবে। রাজ্য সরকারের আইনকে অপব্যাখ্যা করে গৃহশিক্ষকদের সংগঠন নানান আন্দোলন করেছেন।” তিনি জানান, স্কুল শিক্ষকরা যাতে বিভ্রান্ত হয়ে না পড়েন সেই জন্য অভিভাবক ফোরাম পাল্টা রাস্তায় নেমেছে। স্কুল শিক্ষকদের অভয় দিতেই শহর জুড়ে মাইকিং করা হচ্ছে। |