তিস্তা সেচ প্রকল্পের বাঁ হাতি ক্যানালের ফাটল মেরামত করে নতুন করে জল ছাড়তে আরও তিনদিন সময় লাগবে বলে সেচ দফতরের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল। শুক্রবার রাজাডাঙ্গা এলাকা মেরামতের কাজ দেখেন প্রকল্পের সুপারিন্টেডন্ট ইঞ্জিনিয়ার গৌতম চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে জোর কদমে ওই ফাটল মেরামতের কাজ চলছে। এলাকার ঠিকাদারদের কেন ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করার দাবিও বিভিন্ন মহল থেকে উঠেছে। গৌতমবাবু বলেন, “দ্রুততার সঙ্গে ফাটল মেরামতের কাজ চলছে। আরও তিনদিন সময় লাগবে। তার পরে বাঁ হাতি খালে নতুন করে জল ছাড়া হবে।” আর ঠিকাদারদের কালো তালিকাভুক্ত করার প্রসঙ্গে সুপারিন্টেডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “এই বিষয়টি আমার হাতে নেই। আমরা দফতরের উচ্চ পর্যায়ে রিপোর্ট পাঠাচ্ছি।” উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি তিস্তার বাঁ হাতি খালে প্রথম জল ছাড়া হয়। তার পরে দুই দফায় জল ছাড়া বন্ধ হয়। ক্যানালের সিমেন্টের চাদরে ফাটল ধরা পড়ায় গত সোমবার থেকে জল ছাড়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ক্যানালের পরিস্থিতি নিয়ে একের পর সমস্যা দেখা দেওয়ায় যথেষ্ট বিব্রত সেচ দফতরের অফিসারেরা। স্থানীয় চাষিরা জানিয়েছেন, একে তো তড়িঘড়ি বাঁ হাতি ক্যানালে জল ছাড়া হয়েছে। কারণ বহু এলাকায় শাখা ক্যানাল পুরোপুরি তৈরি না হওয়ায় জমি, খেতে জল পৌঁছানোর কোনও প্রশ্নই নেই। এই বিষয়টি দেখাই হয়নি। |
এ ছাড়া মাঝগ্রাম এলাকায় মূল ক্যানাল থেকে শাখা ক্যানালের জল ছাড়ার লকগেটটিও যথেষ্টই খারাপ অবস্থায় রয়েছে বলে চাষিরা জানিয়েছেন। রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষি রেজাউল করিম, আবদুল মোতাবেকরা জানান, প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়লে মাঝগ্রাম এলাকার জল নিয়ন্ত্রণকারি লকগেটটি ভেঙেও যেতে পারে। ওই লকগেটটি অত্যন্ত দুবর্ল হয়ে পড়েছে। বিষয়টি সেচ দফতরের আধিকারিকদের দেখা উচিত। সুপারিন্টেডন্ট ইঞ্জিনিয়ার গৌতমবাবু বলেন, “আমি ডুয়ার্সেই আছি। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ক্যানালের পরিস্থিতি দেখছি। লকগেটটি কথা শোনার তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। সংষ্কার প্রয়োজন হলেও জল ছাড়লে আপাতত লকগেট ঠিকই থাকবে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।” স্থানীয় চাষিরা জানিয়েছেন, রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের মূল ক্যানালের দুটি শাখা ক্যানেল রয়েছে। এর একটি উত্তর হাঁসখালি মৌজায় এবং অন্যটি দক্ষিণ হাঁসখালি মৌজার দিকে রয়েছে। দুটি শাখা ক্যানাল মূল ক্যানাল থেকে যথেষ্টই উপরে রয়েছে। এতে জল ঢুকতে সমস্যা হতে পারে। চাষি এবং বাসিন্দাদের ক্যানাল সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকায় বিষয়টি বলা হচ্ছে বলে সেচ দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, মূল ক্যানালে জল ছাড়ার পর কতটা জল সংশ্লিষ্ট মৌজায় পাঠানো হবে তার উপর ভিত্তি করে শাখা ক্যানালের উচ্চতা ঠিক করা হয়। এটা নিয়ে বিভ্রান্তি কিছু নেই। তিস্তা সেচ প্রকল্পের লেফট ব্যাঙ্ক ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার মৃত্যুঞ্জয় কুমার বলেন, “মূল ক্যানাল থেকে শাখা ক্যানেল উঁচুতে, এতে জল যাবে না। এরকম কিছু আমাদের জানা নেই।” |