নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কর্পোরেশন করা হবে বিধাননগর পুরসভাকে। সঙ্গে যুক্ত হবে আশপাশের কিছু এলাকা। আর বিধাননগরের চেয়ারপার্সন পদটি হয়ে যাবে মেয়র।
শুক্রবার বিধাননগর এবং ব্যারাকপুর কমিশনারেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘোষণা করেছেন। এই কাজ করতে অবশ্য ‘বেশ কিছুটা সময়’ লাগবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন লেকটাউনে কমিশনারেটের উদ্বোধনী মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা একটা নতুন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছি। বিধাননগর এবং তার আশপাশের এলাকা নিয়ে বিধাননগর কর্পোরেশন হবে। এখানেও মেয়র পদমর্যাদা দেওয়া হবে। তাতে কেন্দ্রেরও প্রচুর প্রকল্প আসবে। এলাকার আরও উন্নতি হবে। কিন্তু, এটা আজ বললেই কাল হয়ে যাবে না। পি সি সরকারের জাদু আমার জানা নেই। এর জন্য সময় লাগবে।” নিয়মানুযায়ী, কর্পোরেশনের ‘স্ট্যাটাস’ পেতে পুর-এলাকার জনসংখ্যা ন্যূনতম পাঁচ লক্ষ হতে হবে। প্রতি বর্গকিমিতে বসবাস হতে হবে হাজার জনের। সেই সঙ্গে এলাকার পঞ্চাশ শতাংশের বেশি মানুষকে অ-কৃষিজীবী হতে হবে। |
তোমারে সেলাম: মুখ্যমন্ত্রীকে অভিবাদন মহিলা পুলিশ
অফিসারের। শুক্রবার, লেকটাউনে। ছবি: রাজীব বসু |
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে বিধাননগরের জনসংখ্যা ২ লক্ষ ১৩ হাজারের বেশি। বিধাননগরের সব চেয়ে কাছে দক্ষিণ দমদম পুরসভার লেকটাউন, বাঙুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। অন্য দিকে, নিউ টাউন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অধীনে রয়েছে নিউ টাউনের শহরকেন্দ্রিক এলাকা। তবে, বিধাননগর পুরসভা কর্পোরেশন হলে আশপাশের কোন এলাকাগুলি তার অধীনে আসবে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি মমতা। কলকাতা ছাড়া বর্তমানে রাজ্যে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন রয়েছে চন্দননগর, দুর্গাপুর-আসানসোল, হাওড়া এবং শিলিগুড়িতে।
শুক্রবার থেকেই বিধাননগর এবং ব্যারাকপুর কমিশনারেট চালু হল। বিধাননগরের কমিশনার হলেন রাজীব কুমার এবং ব্যারাকপুরের কমিশনার হলেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। বিধাননগর কমিশনারেটের অফিস হবে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের ভিতরে, হিডকো-র পুরনো অফিসে। আর ব্যারাকপুরের কমিশনারেটের অফিস হবে লাটবাগান এলাকায়। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, নিরাপত্তা জোরদার করতে বিধাননগরে ১৫টি এবং ব্যারাকপুরে ১২টি মোবাইল ভ্যান ঘুরবে। তিনি জানান, হাওড়া, আসানসোল-দুর্গাপুর, বিধাননগর এবং ব্যারাকপুর এই চারটি কমিশনারেট এলাকার প্রতিটির জন্য ৫০০ জন করে পুলিশকর্মী নতুন করে নিয়োগ করা হবে। সেই সঙ্গে হুগলির নগর এলাকা, অর্থাৎ চন্দননগর বা শ্রীরামপুরের মতো এলাকাগুলিকেও আগামী দিনে কমিশনারেটের অধীনে আনা তাঁর চিন্তা-ভাবনায় রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকর্মী ও তাঁদের পরিবারের জন্য ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পের কথাও ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “দশ কোটি পশ্চিমবঙ্গবাসীকে নিরাপত্তা দেন কলকাতার ২৬ হাজার এবং জেলার সর্বসাকুল্যে ৬০ হাজার পুলিশকর্মী। অথচ, তাঁদের অনেকেরই থাকার যথাযথ ব্যবস্থা নেই। আমাদের হাতে টাকা এলেই ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। আট মাসেই আমরা চারটি কমিশনারেট চালু করতে পেরেছি। যা আগে হলে আইন-শৃঙ্খলার অনেক উন্নতি হত। তবে পুলিশকে যেমন কড়া হতে হবে, তেমনই জনসংযোগও গড়ে তুলতে হবে। অন্য দিকে, সব সময়ে যেমন গুলি চালানো যাবে না, তেমনই হাঙ্গামা যাতে না-বাধে, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে। দাঙ্গা আমি হতে দেব না।”
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ওয়েবসাইটেরও উদ্বোধন করেন। তিনি জানিয়েছেন, বাকি সব ক’টি কমিশনারেটেরই ওয়েবসাইট চালু করা হবে। প্রতিটিতেই থাকবে পাবলিক গ্রিভান্স সেল। |