রাজ্য নেতৃত্বকে নির্দেশ হাইকম্যান্ডের
পঞ্চায়েতে জোট ভাবনা ছেড়ে বাড়ান সংগঠন
গামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁদের জোট হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এ-ও মনে করছেন, পঞ্চায়েতে জোট না হলেও তার প্রভাব রাজ্য বা কেন্দ্রীয় স্তরে পড়বে না। কারণ, পঞ্চায়েত ভোটে নিচুস্তরের নেতা-কর্মীদের ওপর রাজ্য নেতৃত্বের সে ভাবে নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তবে একটা বিষয় নিশ্চিত করতে চায় হাইকম্যান্ড। তা হল, পঞ্চায়েত ভোটে জিততে নিচুতলার কংগ্রেস কর্মীরা যেন কোনও ভাবে সিপিএমের সঙ্গে জোট না গড়েন।
কংগ্রেসের এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, “প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি প্রদেশ সভাপতি থাকাকালীন ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে দল যে নীতি নিয়েছিল, এ বারও সেই পথেই হাঁটতে চাইছে কংগ্রেস। সার্বিক ভাবে তখনও পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ও কংগ্রেসের জোট হয়নি। প্রিয়বাবুর বক্তব্য ছিল, দু’দলের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সমঝোতা হচ্ছে না ঠিকই। কিন্তু নিচুতলার কর্মীরা যেখানে প্রয়োজন মনে করবেন, সেখানে এমনিতেই জোট গড়ে নেবেন।” বস্তুত সেটাই ঘটেছিল। তা ছাড়া, পঞ্চায়েত স্তরে অনেক ক্ষেত্রে স্রেফ স্থানীয় কারণেই ‘শত্রু’ দলেরও হাত ধরে যুযুধান দলগুলি। তাই পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয় হাইকম্যান্ড। তারা মনে করে, রাজ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে ধরেই নেওয়া যায় যে পঞ্চায়েত ভোটে কোনও জোট হবে না। তা ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইবেন রাজ্যস্তরে তাঁর শক্তি আরও বাড়ুক। তাই রাজ্য নেতাদের এখন সংগঠন মজবুত করার পরামর্শ দিচ্ছেন শীর্ষ নেতারা। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্তরে কংগ্রেস ও তৃণমূলের জোট যাতে অটুট থাকে ও পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনেও দু’দল যাতে জোট করে এগোতে পারে, সে দিকেও নজর রাখছে হাইকম্যান্ড।
কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস যে কোনও সংঘাতে যেতে চাইছে না, তা নিয়ে সংশয় নেই। তবে এ-ও ঠিক যে, রাজ্যে দীর্ঘদিন পর কংগ্রেস প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেয়েছে। সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে মানুষের আলোচনায় জায়গা পেয়েছে কংগ্রেস। হাইকম্যান্ড চাইছে, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গ্রামেগঞ্জে মানুষের পাশে দাঁড়াক দল। পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে জেলায় জেলায় আরও বেশি করে সামনে আসুক কংগ্রেস।”
দলের সংগঠন ও জনভিত্তি বাড়াতে জেলাস্তরের কংগ্রেস নেতারা কী ধরনের কর্মসূচি নেবেন, সে ব্যাপারেও দাওয়াই দিচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। হাইকম্যান্ডের বক্তব্য, গ্রামীণ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, পরিকাঠামো উন্নয়নে কেন্দ্র বিভিন্ন প্রকল্পে অনুদান দিচ্ছে। কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের সেই প্রকল্পগুলি নিয়ে আরও বেশি করে প্রচারে নামুক দল। ওই সব প্রকল্পের রূপায়ণ ঠিক মতো হচ্ছে কি না বা মানুষ তার সুফল পাচ্ছেন কি না, তা দেখা হোক। না হলে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা তা নিয়ে আন্দোলনে নামুন। তা ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের পিছিয়ে পড়া এলাকার উন্নয়নে কেন্দ্র সম্প্রতি প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার বিশেষ যোজনা মঞ্জুর করেছে। ওই খাতে প্রকল্পগুলি নিয়েও স্থানীয় ভাবে কংগ্রেস নেতারা কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন। গ্রাম তথা পঞ্চায়েত স্তরে কংগ্রেস নেতারা মানুষের বিষয় নিয়ে যত বেশি সরব হবেন, দলের সংগঠন ততই মজবুত হবে বলে বক্তব্য হাইকম্যান্ডের। মালদহ ও উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদ দু’টি এই মুহূর্তে কংগ্রেসের দখলে। বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরির বক্তব্য, কংগ্রেস সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিতে পারলে অন্য জেলাতেও ভালো ফল করতে পারে। তাঁর কথায়, “মুর্শিদাবাদে গত বার ২৫৪টি পঞ্চায়েত সদস্যপদের মধ্যে ১৫৩টি জিতেছিল কংগ্রেস। কিন্তু মাত্র একটি আসনের জন্য জেলা পরিষদ হাতছাড়া হয়।” পরে সিপিএম দলত্যাগ- বিরোধী আইনের বলে তাঁদের এক সদস্যের পদ খারিজ করলেও সেই পদে উপ-নির্বাচন এখনও হয়নি বলে জানান অধীর। তাঁর অভিযোগ, “এর কারণ স্পষ্ট। উপ-নির্বাচন হলেই কংগ্রেস তাতে জিতবে ও মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ দখল করবে।” তবে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে জিতে মুর্শিদাবাদে জেলা পরিষদ গঠনের জন্য হাইকম্যান্ডের দেখানো পথেই চলবেন বলে জানিয়েছেন অধীর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.