শিশু ও কৃষক মৃত্যু, শিক্ষক নিগ্রহ
মুখ্যমন্ত্রী অসহিষ্ণু, অভিযোগ কারাটের
শ্চিমবঙ্গের ‘অসহিষ্ণু’ মুখ্যমন্ত্রী সরকার-বিরোধী কোনও সমালোচনাই সহ্য করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শেষে শুক্রবার কারাট বলেন, “ফসলের দাম না পেয়ে কৃষকদের আত্মহত্যা, হাসপাতালে শিশু-মৃত্যু, বিদ্যায়তনে শিক্ষক নিগ্রহ কোনও ব্যাপারেই বিরুদ্ধ সমালোচনা সহ্য করতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী। সমালোচনা করলে হুমকির সুরে তিনি পাল্টা বলছেন, সব মিথ্যা কথা। কলকাতায় চার দিন থেকে তাই দেখলাম।”
প্রসঙ্গত, কৃষকদের আত্মহত্যা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে কর্মসূচি ঠিক করতে আজ, শনিবার বামফ্রন্টের বৈঠক বসছে। সেখানে শরিকরা সিপিএমের মতে মত দেয় কিনা, সেটাই দেখার।
সরকারের ব্যর্থতার যে দিকগুলি কারাট উল্লেখ করেন, তার মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্য পরিষেবা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন, ‘মা-মাটি-মানুষে’র সরকার ক্ষমতায় আসার আট মাসের মধ্যে রাজ্যে শিশু-মৃত্যুর হার কমেছে। রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র ১০ বছর ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর আমলেই স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন দলের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব।
আলিমুদ্দিনে সাংবাদিক বৈঠকে বিমান ও কারাট।-নিজস্ব চিত্র
বামফ্রন্ট আমলেও স্বাস্থ্য পরিষেবা ছিল সমালোচনার বিষয়। তা মাথায় রাখলে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান নিয়ে আট মাসের সরকারের সমালোচনা করা কতটা যুক্তিসঙ্গত?
জবাবে কারাট কিছুটা রক্ষণাত্মক ঢংয়ে বলেন, “আমরা স্বাস্থ্য পরিষেবার সব বিষয়ে সমালোচনা করছি না। কিছু বিষয়ে সমালোচনা করছি। বিভিন্ন হাসপাতালে যে ভাবে শিশু-মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত শিশু-মৃত্যু বন্ধে অবিলম্বে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া।” কারাটের দাবি, বামফ্রন্টের আমলে এ ভাবে কৃষকের আত্মহত্যা বা শিক্ষক-নিগ্রহের ঘটনা ঘটেনি।
কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এসে বিধাননগরে এক দলীয় সভায় খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিযোগের (এফডিআই) বিরোধিতা নিয়ে মমতার ভূমিকার ‘প্রশংসা’ করেছিলেন কারাট। তাঁর সেই প্রকাশ্য মমতা-প্রশংসায় দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ ‘অসন্তুষ্ট’ হয়েছিলেন। খুচরো ব্যবসায় এফডিআই, লোকপাল বিল অনুযায়ী রাজ্যে লোকাযুক্ত নিয়োগ, নতুন পেনশন নীতি সব ব্যাপারেই তৃণমূল এবং সিপিএমের নীতি এক বলেই মনে করছে আমজনতা। তা হলে কি ভবিষ্যতে কংগ্রেসের নীতির বিরোধিতায় তৃণমূলের সঙ্গে সংসদে দু’দলের কক্ষ সমন্বয় হতে পারে? প্রশ্ন শুনে কারাট দৃশ্যতই উত্তেজিত হয়ে বলেন, “শুধু তৃণমূল নয়, ইউপিএ-র অন্য জোটশরিক ডিএমকে-ও কংগ্রেসের এই সব নীতির বিরুদ্ধে। আসলে কংগ্রেস যে নীতি নিয়ে চলছে, তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। আঞ্চলিক দলগুলি তা বুঝতে পারছে। তাই তারা বিরোধিতা করছে।”
‘পরিবর্তনে’র স্লোগান সামনে রেখে তৃণমূল জোট সরকার ক্ষমতায় এলেও আট মাসেই রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষের অবস্থা খারাপ হয়েছে বলে কারাটের অভিযোগ। তিনি বলেন, “বাম আমলে যে ভাবে রেশন ব্যবস্থার জন্য খাদ্যপণ্য সংগৃহীত করা হত, তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েতকেও কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ১০০ দিনের কাজও কার্যত বন্ধ। গরিব মানুষের জন্য অন্ত্যোদয় ও অন্নপূর্ণা প্রকল্পও অনিয়মিত।”
বামফ্রন্টের আমলে বন্ধ চা-বাগান শ্রমিকদের দেড় হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হত জানিয়ে কারাট আরও বলেন, “চা-বাগানের শ্রমিকরা অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু এ ব্যাপারেও সরকার উদাসীন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.