|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ২... |
|
সাধারণ পাঠকের অভিজ্ঞতার বাইরে |
নারীমুক্তি আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতায় বঙ্গদেশে স্ত্রীশিক্ষার প্রসার ও নারীঅগ্রগতির অভিমুখ তুলে ধরতে সে সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিভিন্ন বিষয়ে মেয়েদের যে তীক্ষ্ণ সচেতন দৃষ্টি ও বোধের বিকাশ ঘটেছিল তা নবজাগরণের অন্যতম একটি অধ্যায়। এই পর্বে যে সমস্ত বঙ্গনারী নিজেদেরকে সেই প্রচেষ্টায় কম বেশি সামিল করেছেন, তাঁরাই আলোচিত হয়েছেন এ যুগের মহিলাদের কলমে। জানানো হয়েছে বলাকা-র (সম্পা: ধনঞ্জয় ঘোষাল) সম্পাদকীয়-তে। পত্রিকাটির বিষয়: ‘নবচেতনায় বঙ্গনারী/ প্রাক স্বাধীনতা পর্ব’। অন্দরমহল থেকে উচ্চশিক্ষা, সাময়িকপত্র, সাহিত্য থেকে আত্মপ্রকাশের লড়াই, সশস্ত্র বিপ্লব নানাবিধ রচনা বিশিষ্ট কলমে।
পদক্ষেপ-এ (সম্পা: জ্যোতির্ময় দাশ অসীমকুমার বসু) প্রবন্ধ-কবিতা-গল্পের পাশাপাশি ক্রোড়পত্র: ‘পুরোনো ভ্রমণকাহিনী’। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, ডা. ডি এন রায়, দেবপ্রসাদ সর্বাধিকারী, স্বামী বিবেকানন্দ, প্রমদারঞ্জন রায়, অক্ষয়কুমার নন্দী এমন সাতজন বাঙালির ভ্রমণবৃত্তান্ত নির্বাচনের কারণ হিসেবে ক্রোড়পত্র-সম্পাদক সমীর সেনগুপ্ত জানিয়েছেন: ‘এর মধ্যে অনেকগুলিই এখনকার দিনে সম্পূর্ণ বিস্মৃত, সাধারণ বাঙালি পাঠকের অভিজ্ঞতার বাইরের বিষয়। বাঙালি ঘরকুনো বলে নিন্দিত, কিন্তু নানা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বাঙালির সামগ্রিক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা যে কত বিপুল, কত বিচিত্র ও নানা বর্ণসমন্বিত তা এই সব কাহিনীর অংশগুলি পড়লেই প্রতিপন্ন হবে।’ ‘এই ইস্তানবুল আমারই মাথার ভেতরে আছে। এবং আমি যে ইস্তানবুলে থাকি, তার চেয়েও বেশি বাস্তব এটি। এই সময়েই আমার কাহিনির মানুষজন, বাড়ি ঘরদোর নিজেদের ভেতরে কথা কয়ে উঠল যেন নিজেদের স্বকীয় অস্তিত্ব লাভ করল।’ ওরহান পামুক-এর এই নোবেল-বক্তৃতার অনুবাদ করেছেন যশোধরা রায়চৌধুরী। চার বছর প্রস্তুতির পর প্রকাশ পেল দিবারাত্রির কাব্য-র (সম্পা: আফিফ ফুয়াদ) ‘ওরহান পামুক সংখ্যা’। বাংলায় পামুক-চর্চায় নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য কাজ। পামুকের যে চারটি বইয়ের আংশিক অনুবাদ হয়েছে, প্রতিটির আগেই ভূমিকায় অনুবাদকরা বইটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন, যাতে পামুকের সৃজন-বোধটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সঙ্গে রয়েছে পামুক-বিষয়ক প্রবন্ধাদিও, পড়ার পর পাঠকের পামুক-উপলব্ধি আরও পূর্ণতা পাবে।
সমকালের জিয়নকাঠি-র (সম্পা: নাজিবুল ইসলাম মণ্ডল) এ বারের বিশেষ সংখ্যা: ‘সুন্দরবনের কথাসাহিত্য (প্রথম খণ্ড)’। সম্পাদক জানাচ্ছেন ‘প্রায় পঁয়তাল্লিশ লক্ষ মানুষের সিংহ ভাগের জীবনের হাল হকিকৎ জানা নেই।... তাদের জান, মাল, ইজ্জত, উৎসব-উদ্যাপন খুশি খুশি হ’য়ে ওঠার নানান ঘটনার প্রচেষ্টা এ সংখ্যায় আনার সর্বাত্মক চেষ্টা হয়েছে।’ সুন্দরবনের মানুষজনের বর্ণময় জীবনের বৃত্তান্ত কী ভাবে ধরা পড়েছে সাহিত্যিকদের কলমে, তা নিয়ে যেমন আলোচনা রয়েছে, তেমনই আছে সে-জীবনকে জড়িয়ে একগুচ্ছ গল্পও। আরও আকর্ষণীয় ‘সাক্ষাৎকার’ অংশটি, যেখানে নিজেদের লেখালেখিতে সুন্দরবনের অভিজ্ঞতা কী ভাবে উঠে আসছে তা নিয়ে বলেছেন শক্তিপদ রাজগুরু সাধন চট্টোপাধ্যায় ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায় উৎপলেন্দু মণ্ডল আবুল বাশার বিকাশকান্তি মিদ্যা সোহারাব হোসেন তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সুন্দরবনকেন্দ্রিক উপন্যাসের সারণিও রয়েছে। ‘সাহিত্যকে দেশকালপাত্রে ছোটো করিয়া দেখিলে ঠিকমত দেখাই হয় না। আমরা যদি এইটে বুঝি যে, সাহিত্যে বিশ্বমানবই আপনাকে প্রকাশ করিতেছে তবে সাহিত্যের মধ্যে আমাদের যাহা দেখিবার তাহা দেখিতে পাইব।... আমার উপরে যে আলোচনার ভার দেওয়া হইয়াছে ইংরেজিতে আপনারা তাহাকে Comparative Literature নাম দিয়াছেন। বাংলায় আমি তাহাকে বিশ্বসাহিত্য বলিব।’ রবীন্দ্রনাথের ‘বিশ্বসাহিত্য’ প্রবন্ধটি দিয়েই শুরু হয়েছে তুলনামূলক সাহিত্য/ একটি তির্যক প্ররোচনা (সম্পা: সুমন গুণ। একুশ শতক, ২৫০.০০) বইটি। রবীন্দ্রনাথ ছাড়াও বঙ্কিমচন্দ্র থেকে বুদ্ধদেব বসু বিষ্ণু দে এবং এ কালের নানা বাঙালি সাহিত্য-চিন্তকের রচনায় ঋদ্ধ বইটি। রয়েছে ক্লিন্টন বি সিলি-র রচনাও। সঙ্গে তরুণ মজুমদার রবীন মণ্ডলের রচনা, উৎপল দত্তের সাক্ষাৎকার।
|
|
|
|
|
|