সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের ভর্তির টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতে কলেজের অফিস ঘরে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) সদস্যদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে বাঁকুড়ার সম্মিলনী কলেজে এই ঘটনাটি ঘটে। কলেজের অধ্যক্ষ সমীরকুমার মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “কলেজের প্রধান হিসাব রক্ষকের অফিস ঘরের চেয়ার-টেবল টিএমসিপি’র সদস্যরা ভাঙচুর করেছে। হাঙ্গামার নেতৃত্বে থাকা শেখ সিরাজ টিএমসিপি’র ছাত্র সংসদের সদস্য।” তবে তিনি এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জানাননি। অন্য দিকে, টিএমসিপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় খাতড়া আদিবাসী কলেজের ছাত্র সংসদ দখল করল। |
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে কলেজে ভর্তির জন্য নেওয়া টাকা সরকার ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সেই টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য এ দিন কলেজের প্রধান হিসাব রক্ষকের দায়িত্বে থাকা হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে কিছু ছাত্র চড়াও হয়ে চেয়ার-টেবল উল্টে দেয়। হিরন্ময়বাবু বলেন, “ভর্তির টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আবেদন পত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। শেখ সিরাজের নেতৃত্বে তৃতীয় বর্ষের কয়েক জন ছাত্র এসে ভর্তির টাকা এ দিনই দেওয়ার দাবি জানানয়। এখনই তা দেওয়া যাবে না বলায়, তারা ভাঙচুর চালায়।” তবে তাঁকে নিগ্রহ করা হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন। এ দিন সন্ধ্যায় তিনি কলেজের অধ্যক্ষের কাছে ইস্তাফাপত্র জমা দেন। তিনি বলেন, “অবসরের পরে এক বছর ধরে ছাত্রদের স্বার্থে কলেজের কাজ করছিলাম। এ দিন যা হল তারপর পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিই। অধ্যক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।” অধ্যক্ষ বলেন, “তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।” টিএমসিপি নেতা শেখ সিরাজের দাবি, “ন্যায্য টাকা চাইতে গিয়েছিলাম। কলেজ কর্তৃপক্ষের ঢিলেমির জন্য ওই টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক জন ছাত্র উত্তেজিত হয়ে ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে। আমি কাউকে উস্কানি দিইনি।” কলেজের অধ্যক্ষ জানান, কলেজের পরিচালন সমিতি’র সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
খাতড়া আদিবাসী কলেজে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ছাত্র সংসদের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া শেষ দিন পার হওয়ার পরে এসএফআই অভিযোগ তুলেছিল, বহিরাগতরা তাদের মনোনয়ন পত্র জমা দিতে বাধা দিয়েছে। দুই ছাত্র কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা মহকুমা শাসক (খাতড়া) দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, “হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ উঠে গিয়েছে। ছাত্র সংসদের ১৮টি আসনে শুধু টিএমসিপি’র প্রার্থীরাই মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। তাদের বিজয়ী ঘোষণা করে ছাত্র সংসদ ঘোষণা করতে বলা হয়েছে।” এ দিন টিএমসিপি ছাত্র সংসদ গঠন করে। এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক ধর্মেন্দ্র চক্রবর্তী’র অভিযোগ, “টিএমসিপি’র সন্ত্রাসের জন্যই আমাদের প্রার্থীরা খাতড়া-সহ জেলার অনেক কলেজে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারেনি। এ দিন বাঁকুড়ার সম্মিলনী কলেজেও ওরা হাঙ্গামা করে দেখিয়ে দিল পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট করতে চাইছে।” টিএমসিপি’র জেলা সভাপতি শিবাজি বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “ছাত্র সংসদের নির্বাচন বানচাল করার জন্য এসএফআই মামলা করেছিল। আমাদের বিরুদ্ধে ওরা যতই কুৎসা রটাক। ছাত্র-ছাত্রীরা আর ওদের সমর্থন জানাবেন না।” |