যদুপুরে উৎখনন চান পুরাতাত্ত্বিকেরা
মাটি খুঁড়তে গিয়ে সম্প্রতি একটি ভগ্ন বুদ্ধ মূর্তির সঙ্গে ষষ্ঠ-সপ্তম শতকের যে লিপিটি উদ্ধার করা হয়েছে, দক্ষিণবঙ্গে তা বিরল। এর আগে উত্তরবঙ্গের কোথাও কোথাও ব্রাহ্মীতে লেখা সেই সংস্কৃত মন্ত্রটি অবশ্য পাওয়া গিয়েছে।
মুর্শিদাবাদের পার্শ্ববর্তী মালদহেও ধাতু নির্মিত বুদ্ধমূর্তির পিছনে এই মন্ত্র পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু তা-ও ছিল অষ্টম শতাব্দীর। পুরাতাত্ত্বিকেরা জানাচ্ছেন, দক্ষিণবঙ্গে এমনিতেই বুদ্ধ মূর্তি কম পাওয়া গিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই লেখ-টি থেকে সমসাময়িক ইতিহাস সম্পর্কেও নতুন আলোকপাত সম্ভব বলে পুরাতাত্ত্বিকেরা মনে করেন। রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতরের উপ-অধিকর্তা অমল রায় বলেন, “দক্ষিণবঙ্গে এত পুরনো লেখ আমরা কমই পেয়েছি। কর্ণসুবর্ণ অঞ্চল সে সময়ে রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছিল। গুপ্ত যুগের পরপরই শশাঙ্কের আমলের কাছাকাছি সময়ে তাঁর রাজধানী কর্ণসুবর্ণ এলাকায় বৌদ্ধরাও যে ছিলেন, তার একটা প্রমাণ এই মূর্তি থেকে পাওয়া গেল।”
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও লিপি বিশারদ সুরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য লেখটি পরীক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, “লেখটির গোড়ার দিক ও শেষের দিকের কিছুটা নেই। কিন্তু যেটুকু রয়েছে, তা থেকে বোঝা যাচ্ছে মন্ত্রটা কী।” সেই মন্ত্র হল, ‘যে ধর্মা হেতুপ্রভবা হেতুং তেষাং তথাগতোহ্যবদৎ। তেষাংচ যো নিরোধ এবং বাদী মহাশ্রমণঃ।
মূর্তিটি যদুপুর গ্রামের যেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে, তার থেকে ৫০ মিটার দূরে পশ্চিম পাড়ে রাক্ষসীডাঙা। এর আগে ২০০৯-১০ সালে এএসআই এবং রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতর যৌথ ভাবে ওই স্থলে খনন কার্য চালিয়ে ষষ্ঠ থেকে সপ্তম শতকের ইটের স্থাপত্য ঘর ও প্রবেশ দ্বার চিহ্নিত করে, যা গুপ্ত যুগের শেষ দিকের এবং শশাঙ্কের সময় কালের। তারও আগে ১৯২৮-২৯ সালে ওই রাক্ষসীডাঙায় এএসআই-এর তরফে কে এন দীক্ষিতের নেতৃত্বে পরীক্ষামূলক উৎখননের ফলে অন্তত তিনটি যুগের বাড়ি ঘরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। সব নীচের ধ্বংসাবশেষটি ষষ্ঠ বা সপ্তম শতাব্দীতে নির্মিত একটি বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু এটিই যে কর্ণসুবর্ণ বিহার সে বিষয়ে নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি। ঢিবিটির পরিধি প্রায় ৭০০ ফুট এবং চার দিকের শস্যখেতের থেকে ২৫ ফুট উঁচু। অমলবাবু বলেন, “ঢিপি দেখে চতুষ্কোণ বা বর্গাকার স্থাপত্যের নির্দশন পাওয়া যাবে এই অনুমানের ভিত্তিতে প্রথম বার উৎখনন চালানো হয়। তাতে স্থাপত্যের দক্ষিণ দিকের প্রায় পুরো দেওয়াল চিহ্নিত বা উন্মোচিত হয়েছে। এছাড়াও পোড়া মাটির বেশ কিছু প্রত্নসামগ্রী পাওয়া যায়। তার মধ্যে রয়েছে পোড়ামাটির তিনটে মস্তকও।” অমলবাবু চান, “অবিলম্বে ওই জায়গায় খনন কার্য করে ইতিহাসের উপাদান খুঁজে বের করতে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.