|
|
|
|
|
|
|
মুখোমুখি ৩... |
|
স্বপ্নের ফেরিওয়ালা |
ছ’বছর নিরুদ্দেশের পরে ফিরলেন ‘মন বাওড়া’র প্রতীক চৌধুরী। মুখোমুখি বিপ্লবকুমার ঘোষ। |
পত্রিকা: আপনি ছ’বছর প্রায় নিরুদ্দেশ। ‘গানের ফেরিওয়ালা’ হয়ে আবারও কোনও নতুন স্বপ্ন দেখছেন নাকি?
প্রতীক চৌধুরী: হ্যাঁ, ছ’বছর পরে আবারও সত্যি-ই স্বপ্ন দেখছি। আগের সিডি জনপ্রিয় হয়েছিল বটে কিন্তু পরে গানের বাজারে যে হাল দাঁড়াল তা দেখে শুনে আর নতুন কোনও গানের সিডি করার সাহস পাইনি।
পত্রিকা: তার মানে বলছেন আপনার সমান্তরাল সব শিল্পীরই বাজার খারাপ?
প্রতীক চৌধুরী: অবশ্যই। বাজারে কার কত গানের সিডি বিক্রি হয়েছে তার জন্য কোনও পরিসংখ্যানের দরকার নেই। আরে, শিল্পীদেরই জিজ্ঞেস করুন না, যে তাঁদের গানের সিডি বিক্রি সত্যিই আশানুরূপ হয়েছিল কিনা।
পত্রিকা: যেমন?
প্রতীক চৌধুরী: অনেক উদাহরণ আছে। জীবনমুখী গানের আমাদের প্রজন্মের প্রথম সারির শিল্পীর কথাই ভাবুন না। যার এক সময় অসংখ্য অ্যালবাম বিক্রি হত, তাঁরও বিক্রি কিন্তু তলানিতে ঠেকেছিল। আরও কয়েকজনের কথা বলতে পারি, যাঁদের আবার বিক্রির থলি ছিল শূন্য।
পত্রিকা: যাক তাহলে সেই শূন্যস্থান থেকে বেরোতে চাইছেন?
প্রতীক চৌধুরী: চেষ্টা করছি। মানুষ এখনও কোনও কিছুতেই থিতু নয়। কিন্তু কিছু চায়। সেই চাওয়ার জায়গা থেকেই আমার মনে হয়েছে কিছু করি। সেটা বিফলে যাবে বলে মনে হয় না।
পত্রিকা: তার মানে বাংলা গানের বাজার আবার ফিরবে বলছেন?
প্রতীক চৌধুরী: আমি আশাবাদী। ভাঁটার পরেই তো জোয়ার আসে।
পত্রিকা: কিন্তু গান-বাজনার বাজার এমন ছন্নছাড়া হল কেন?
প্রতীক চৌধুরী: হবে না কেন? রুচিহীন কিছু লোকের খামখেয়ালিপনা আর যোগ্য লোকের অভাবে বাংলা গান মোটেই জমছিল না।
পত্রিকা: আপনি বাজার খারাপ বলছেন, অথচ অনেকেই তো প্রতি বছর বাজারে গানের সিডি আনছেন।
প্রতীক চৌধুরী: আরে আমার অনেক কনিষ্ঠই তো বিক্রি হোক বা না হোক প্রতি বছর অ্যালবাম করেন নিয়ম-মাফিক প্রসবের মতো। বাজারে টিকে থাকার জন্য।
পত্রিকা: তাই তো হওয়া উচিত?
প্রতীক চৌধুরী: না, আমার সেই অবস্থা নয়। অনুষ্ঠান করে পেট চালাই। পড়তি বাজারে ফড়িং-এর মতো লাফাই না। প্রতি বছর সিডি বাজারে ছাড়লেই সে খুব বড় মাপের শিল্পী হয়ে যায় নাকি?
পত্রিকা: অ্যালবামের নাম ‘মন বাওড়া’। নামকরণ এ রকম কেন?
প্রতীক চৌধুরী: ‘মন বাওড়া’র অর্থ মনের পাগলামি।
পত্রিকা: বুঝতে পারছি না, এটা গান নিয়ে পাগলামি নয় তো?
প্রতীক চৌধুরী: সে দুঃসাহস আমার নেই। বরং সাহস নিয়ে বলতে পারি এই অস্থির সময়ে মানুষের মন নিয়েও দোলাচল চলছে। সেই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতিটা বদলে দিতে চাই।
পত্রিকা: কী করে বদলাবেন? ভাল গান তো ডাউনলোড হয়ে যাচ্ছে। সিডি বিক্রি আর হবে কেন?
প্রতীক চৌধুরী: জানি। কিন্তু এই সমস্যা শুধু মাত্র শহরেরই। গ্রামাঞ্চলে বাংলা গানের কদর আছে, বিক্রিও আছে।
পত্রিকা: গ্রামবাংলার লোক আজকাল দেদার সিডি কিনছে নাকি?
প্রতীক চৌধুরী: আমি সে ভাবে বলিনি। সিডির যা দাম তা তাঁদের আয়ত্তের মধ্যে থাকলে কেন তিনি কিনবেন না!
পত্রিকা: আপনি বেশ মজার লোক তো! বাংলা গানের সংকলনে একটি হিন্দি গানও ঢুকিয়ে দিয়েছেন। এমন হয় নাকি?
প্রতীক চৌধুরী: (হাসতে হাসতে) পরিবর্তনের যুগ তো। তাই শেষ গানটি হিন্দিতে রেখেছি। তবে গর্ব করে বলতে পারি, এই প্রথম কোনও বাংলা গানের সংকলনে হিন্দি গান রাখার সাহস দেখিয়েছি।
|
|
|
|
|
|