বি সি রায় ট্রফির গ্রুপ লিগ পর্যায়ে প্রথম ম্যাচ ড্র করার পর বাংলার উপর যে চাপ সৃষ্টি হয়েছিল মহারাষ্ট্রকে ৮-০ গোলে হারিয়ে তা কাটিয়ে উঠল প্রশান্ত চক্রবর্তীর ফুটবলাররা। শুক্রবার শিলিগুড়ির রানিডাঙায় এসএসবি মাঠে মহারাষ্ট্রকে তারা কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে। তবে এ দিন মেঘালয় দ্বিতীয় ম্যাচ জেতায় মূলপর্ব রাউন্ড রবিন লিগে উঠতে বাংলার সামনে মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তারা। আগামী ২২ জানুয়ারি মেঘালয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতলে তবেই মূলপর্বে উঠতে পারবে দীপক মণ্ডলের বাংলা। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে গত দু দিন চরম অব্যবস্থা মেটাতে এ দিন তোড়জোড় দেখা গিয়েছে কর্মকর্তাদের। ম্যাচ কমিশনার মাধব জি সুবর্ণ বলেন, “এ দিন সময় মতো চিকিৎসককে মাঠে আনা এবং খেলার সময় তাঁদের মাঠে থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন আয়োজকরা। স্কোর বোর্ডও যথাযথ ভাবে লেখা হয়েছে।” বি সি রায় ট্রফি জুনিয়র জাতীয় ফুটবল লিগে ১৬ টি দলকে ৪ টি ক্লাস্টারে ভাগ করে গ্রুপ লিগ পর্যায়ে প্রাথমিক পর্বের খেলা হচ্ছে। প্রতিটি ক্লাস্টার থেকে ১টি করে দল মূলপর্বে উঠবে। এই পর্যায়ে ৩ টি ম্যাচ খেলবে প্রতিটি দল। ‘সি’ ক্লাস্টারে ৪ টি দলের মধ্যে বাংলার সঙ্গে রয়েছে পঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, মেঘালয়। এ দিন পঞ্জাবকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইতিমধ্যেই ২ টি ম্যাচ জিতল মেঘালয়। প্রথম ম্যাচে মহারাষ্ট্রকে তারা হারিয়েছে। |
রানিডাঙ্গার এসএসবি মাঠে বাংলা বনাম মহারাষ্ট্রের খেলা চলছে। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক। |
গ্রুপে মেঘালয় এখনও শীর্ষে। দ্বিতীয় বাংলা। মহারাষ্ট্র ২ টি ম্যাচ হেরেছে। পঞ্জাব ১ টি হেরেছে, বাংলার সঙ্গে একটি ম্যাচ ড্র করেছে। তাই বাংলা-মেঘালয় ম্যাচ যে জিতবে মূলপর্বে যাবে তারাই। ম্যাচ ড্র হলে মেঘালয়ের পাল্লা ভারি। এ দিন মহারাষ্ট্রকে হারিয়ে খুশি কোচ প্রশান্ত চক্রবর্তী, ম্যানেজার স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মেঘালয় ২ টি ম্যাচ জেতায় কোচের প্রতিক্রিয়া, “মেঘালয়ের সঙ্গে পরের ম্যাচটা আমাদের জিততেই হবে। আশা করি ফুটবলাররা পারবে।” এ দিন প্রথমার্ধে বাংলা ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। খেলা শুরু ৮ মিনিটের মাথায় গোল করেন অরিজিৎ বাগুই। এর পর বারবার আক্রমণে গিয়েও একাধিক সুযোগ পেয়ে প্রথম ম্যাচের মতোই গোল করতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন ফৈয়াজ, রাজীব ঘোরুই, সুমিত ঘোষরা। এক গোল যে কোনও সময় শোধ হয়ে যেতে পারে দেখে চিন্তায় পড়েন কোচও। প্রথমার্ধের শেষে খেলোয়াড়দের ডেকে বকাঝকা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এ দিন সায়ন দত্তের পরিবর্তে প্রথম এগারোয় দলে ছিলেন অভিজিৎ বর্মন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দ্বিতীয় গোলটি করেন ফৈয়াজ। ফৈয়াজ গোল দেওয়ার ২ মিনিটের মাথায় গোল করেন সুমিত। তার পর একে একে গোল করেন তন্ময় দাস, অভিজিতের বদলি খেলোয়াড় হিসাবে নেমে সায়ন। স্টপার সুমন সাহাও উঠে গিয়ে গোল করেন। গোল পাচ্ছিলেন না রাজীব ঘোরুই। বক্সের বাইরে গোলকিপার সুমিতকে চেজ করতে গেলে পেনাল্টি পায় বাংলা। তা থেকে গোল করেন রাজীব ঘোরুই। পরে তিনি আরেকটি গোল দেন। মহারাষ্ট্রের রক্ষণভাগকে শুরু থেকেই এ দিন ইচ্ছে মতো বারবার ভেঙে দিয়েছেন বাংলার ফুটবলাররা। অন্য দিকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ‘এ’ ক্লাস্টারে থাকা দলগুলির মধ্যে তামিলনাড়ু ২-১ গোলে হারিয়েছে চণ্ডীগড়কে। ঝাড়খণ্ড ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশকে। এখন পর্যন্ত ২ টি ম্যাচ জিতল ঝাড়খণ্ড। চণ্ডীগড় ২ টি ম্যাচ হেরেছে। ১ টি করে ম্যাচ জিতেছে এবং ১ টি করে হেরেছে তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ। |