সংযুক্ত জনতা দলের (জেডিইউ) সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনে লড়াইয়ের পাশাপাশি বাটলা হাউস সংঘর্ষের বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে কংগ্রেসকে অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিল তৃণমূল নেতৃত্ব।
আজ তৃণমূল উত্তরপ্রদেশে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে। ওই দফায় ৫৯টি আসনের মধ্যে আজ ৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন ওই রাজ্যে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা সুলতান আহমেদ। ফলে স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, বাকি আসনগুলি কি জেডিইউ-এর জন্য ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল? সুলতান অবশ্য তা স্বীকার করতে চাননি। তিনি বলেন, “একটি বিধানসভা আসনে একাধিক প্রার্থী দাঁড়াতে চাওয়ায় নাম ঘোষণা করা যায়নি।” তৃণমূলের একাংশ কিন্তু বলছে, নীতীশের দলের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত রফা হলে ওই আসনগুলো জেডিইউ-কে ছেড়ে দিতে পারে দল। সুলতানের কথায়, “ধর্মনিরপেক্ষ দল হিসাবে জেডিইউ-এর সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। বিজেপি ছাড়া অন্য যে কোনও দলের সঙ্গে আমরা জোট বেঁধে নির্বাচনে লড়তে পারি।”
পাশাপাশি আজ বাটলা হাউস সংঘর্ষের ফের তদন্ত করানোর দাবি করেন সুলতান। দিন কয়েক আগে সংখ্যালঘু ভোটের কথা মাথায় রেখে ওই একই দাবি জানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ওই সংঘর্ষ ভুয়ো নয়। তিনি বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবিও খারিজ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় চিদম্বরমেরই সহকর্মী সুলতান আহমেদ ফের তদন্তের দাবি ওঠানোয় কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে সরকার। আজ সুলতান বলেন, “গত তিন বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চলছে। তা শেষ করতে তদন্ত কমিশন বসানোর সিদ্ধান্ত নিক সরকার।” তদন্তের দাবি একবার খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে সুলতান আজ এই দাবি তোলায় কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
তৃণমূল শিবিরের অবশ্য দাবি, তৃণমূল ও কংগ্রেসের যে সাম্প্রতিক বিবাদ চলছে, এই ঘটনার মধ্যে তার ছায়া খোঁজা উচিত নয়। যদিও রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে একা লড়ার সিদ্ধান্তের পাশাপাশি বাটলা হাউসের তদন্তের দাবি জানিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বার্তা দিতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
যদিও ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা জানিয়েছেন, এমন তো নয় উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিচ্ছে তৃণমূল। সব দলের বিরুদ্ধেই লড়বে তৃণমূল। জাতীয় দল হিসাবে তৃণমূলকে পরিচিতি দিতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশের জাত-পাত ভিত্তিক ভোটে তৃণমূলের পক্ষে ভাল ফল করা কঠিন। দলেরও একাংশ মনে করছে, সংগঠন তৈরি না করে কেবল জাতীয় রাজনীতিতে উপস্থিতি প্রমাণ করতে গিয়ে মমতা যে ভাবে একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে আখেরে দলের মুখ পুড়তে পারে। যদিও সুলতান আশাবাদী, যে ভাবে বাছাই করে প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছে তাতে উত্তরপ্রদেশে ভাল ফল হবে। |