বিতর্কে ‘দুঃখিত’ অ্যান্টনি
সেনাপ্রধানের বয়স নিয়ে জনস্বার্থ মামলা খারিজ
ন্তত একটা বিষয়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে কার্যত একই সারিতে দাঁড়িয়ে ভারত। রকমফের থাকলেও এই তিন দেশের সরকারই এখন সেনাবাহিনীকে নিয়ে অস্বস্তিতে। পাকিস্তানে সেনার সঙ্গে গিলানি-সরকারের দ্বন্দ্ব কাটছে না। বাংলাদেশে গত কালই সেনা অভ্যুত্থানের চক্রান্ত ফাঁস হয়েছে। তুলনামূলক ভাবে পরিস্থিতি অনেক ভাল হলেও সেনাপ্রধানের সঙ্গে এখন আইনি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে এ দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
সেনাপ্রধানের বয়স-বিতর্কে প্রাক্তন সেনাকর্মীদের একটি সংগঠন জনস্বার্থের যে মামলা দায়ের করেছিল, আজ তা খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গ্রেনেডিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রোহতক শাখা আদালতে আর্জি জানিয়েছিল, ১৯৫০ সালের বদলে ১৯৫১ সালকেই সেনাপ্রধানের জন্মসাল হিসেবে ধরা হোক। সেনাপ্রধান জেনারেল বিজয় কুমার সিংহ নিজেও তা চাইছেন। এ বিষয়ে তিনি আদালতে মামলাও করেছেন। সর্বোচ্চ আদালত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য শোনা হয়। সে জন্য ইতিমধ্যেই ‘ক্যাভিয়েট’ পেশ করেছে কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্ট চাইলে দু’টি মামলার শুনানি এক সঙ্গেই চালাতে পারত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, যে হেতু সেনাপ্রধান নিজেই আদালতে আবেদন করেছেন, তাই শুধু সংবাদমাধ্যমের খবরের ভিত্তিতে একটি জনস্বার্থ মামলাকে গুরুত্ব দেওয়া হলে তা খারাপ উদাহরণ তৈরি করবে।
এতে অবশ্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রক উল্লাসের কোনও কারণ দেখছে না। উল্টে গোটা বিষয়টি নিয়ে মনমোহন-সরকার যে চরম অস্বস্তিতে তা স্পষ্ট। গত কাল বিষয়টি ‘স্পর্শকাতর’ বলে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। আজ এ বিষয়ে প্রথম মুখ খুলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি জানান, এই বিতর্ক নিয়ে তিনি ‘যথেষ্ট দুঃখিত’।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, বিষয়টি নিয়ে সাত মাস ধরে বিতর্ক চললেও সরকার কেন কোনও সমাধানসূত্র বের করতে পারল না। সরকার ও কংগ্রেসের মধ্যেও অ্যান্টনির ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে কথা উঠেছে। কিন্তু তিনি দশ জনপথের ঘনিষ্ঠ বলে কেউই মুখ খুলছেন না। বিরোধী দলগুলি একে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক তথা সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতা হিসেবেই দেখছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন দু’দিকেই লড়াই চালাচ্ছে কেন্দ্র। এক দিকে আদালতে সরকারের বক্তব্য ও তথ্যপ্রমাণ তৈরির কাজ চলছে। অন্য দিকে সেনাপ্রধানের সঙ্গেও দু’পক্ষের জন্যই সম্মানজনক সূত্রে পৌঁছতে চাইছে সরকার। সেনাপ্রধান নিজেও তাঁর মামলার আশু শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টে তদ্বির-তদারকি করছেন না। আজ সেই জন্যই সেনাপ্রধানের আদালতে যাওয়া নিয়ে কোনও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করতে চাননি অ্যান্টনি। কিন্তু গোটা বিতর্ক প্রকাশ্যে এসে যাওয়ায় তিনি যে অস্বস্তিতে, তাঁর কথাতেই তা বোঝা গিয়েছে। তিনি বলেন, “আমি সব সময়ই এ নিয়ে প্রকাশ্য বিতর্কের বিরুদ্ধে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের অনেকেই এতে উল্লসিত। এটা উল্লাসের বিষয় নয়।”
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক মনে করছে, আজ সুপ্রিম কোর্ট সেনাপ্রধানের বয়স-বিতর্ক নিয়ে মন্তব্য না করলেও এটা যে চাকরির নিয়ম সংক্রান্ত বিষয়, তা উল্লেখ করেছে। প্রাক্তন সেনাকর্মীদের দায়ের করা মামলাটি খারিজ করতে গিয়ে আদালত জানিয়েছে, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই মামলা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ এতে কারও মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে না। এটা নিছক ‘সার্ভিস-ম্যাটার’। বয়স-বিতর্কে বেশ কয়েক জন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সেনাপ্রধানকে সমর্থন করেছিলেন। সেনাপ্রধানের শিবির তা বারবার উল্লেখও করেছে। জনস্বার্থের মামলাতেও আবেদনের সঙ্গে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিদের মতামত জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে প্রাক্তন বিচারপতিদের মতামত সম্বলিত কোনও মামলা গ্রহণ না করতে বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.