|
|
|
|
|
টাকা নিয়ে ক্ষমা নয়,
বিয়েই চান ধর্ষিতা
অরুণোদয় ভট্টাচার্য |
|
পাঁচ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ধর্ষণকারীকে ক্ষমা প্রদর্শনের পক্ষপাতী নন তিনি। কারণ, তাঁর কাছে টাকার থেকেও সন্তানের পিতৃপরিচয় এবং নিজের সামাজিক স্বীকৃতিটাই বড়। তাই টাকা নয়। তিনি চান, ধর্ষণকারী তাঁকে বিয়ে করুন, স্বীকৃতি দিন।
ধর্ষণকারী রাজু দাসকে নিম্ন আদালত ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। রাজু প্রায় ছ’বছর জেল খেটেছেন। তার পরে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আপিল মামলা করেন তিনি। আপিল মামলা বিচারের জন্য গৃহীত হওয়ায় রাজু এখন জামিনে মুক্ত। তাঁর আপিল মামলার সওয়াল শুরু হয়েছে। বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত ও বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই আপিল মামলার শুরুতেই রাজু দাসের আইনজীবীকে বলে, আবেদনকারী যদি ওই ধর্ষিতাকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে রাজি হন, তা হলে আদালত তাঁর বাকি শাস্তি মকুব করে দেওয়ার কথা বিবেচনা করবে।
ডিভিশন বেঞ্চ ভেবেছিল, সেই টাকা ব্যাঙ্কের মেয়াদি আমানতে জমা রাখলে ওই মহিলা মাসে প্রায় ছ’হাজার টাকা সুদ পাবেন। সেই টাকায় সন্তান এবং তাঁর ন্যূনতম গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা হতে পারবে। কারও গলগ্রহ হয়ে থাকতে হবে না। মহিলার মতামত জানার জন্য বিচারপতি তাঁকে হাইকোর্টে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। মহিলা জানিয়ে দেন, তিনি এক টাকাও চান না। তিনি চান, রাজু তাঁকে বিয়ে করুন। তিনি ভালবেসে, বিশ্বাস করে, ঘর গড়ার স্বপ্ন নিয়ে রাজুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন। সেই বিশ্বাসেরই মর্যাদা চান। চান সন্তানের পিতৃপরিচয়। এ কথা বিচারপতিকে জানিয়ে সন্তানের হাত ধরে গ্রামে ফিরে যান তিনি।
পরের দিন মামলাটির শুনানির সময় রাজুর আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চকে জানান, তাঁর মক্কেল গরিব। তিনি বড়জোর দেড় লক্ষ টাকা দিতে পারেন। বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত জানিয়ে দেন, আবেদনকারীকে এক টাকাও দিতে হবে না। কারণ মহিলা টাকা নিতে রাজি নন। তিনি চান স্বীকৃতি। আবেদনকারীকে বিয়ে করতে চান। বিচারপতি ওই আইনজীবীকে বলেন, আবেদনকারী (রাজু) বিয়ে করতে রাজি কি না জানান। সন্তান তো তাঁরই। মিলনবাবু জানান, রাজু এবং তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলে আগামী ২৪ জানুয়ারি তিনি আদালতকে তাঁদের মতামত জানাবেন। |
|
|
|
|
|