|
|
|
|
বইমেলা |
গিল্ডকে ছাড় দিতে বুদ্ধের পথেই মমতা |
মিলন দত্ত |
বইমেলাকে মাঠের ভাড়ায় ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকারকে অনুসরণ করলেও প্রমোদ-করে কোনও রকম ছাড় দিতে রাজি নয় কলকাতা পুরসভা। এখনও পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্তই বহাল রয়েছে। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হস্তক্ষেপে বইমেলার জন্য ‘পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড’কে মিলনমেলা প্রাঙ্গণ দেওয়া হয় ২৫ লক্ষ টাকা ভাড়ায়। এ বছরও সেই ভাড়াতেই মিলনমেলা পাচ্ছে গিল্ড। তবে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় শুক্রবারও সোজাসাপ্টা জানিয়ে দেন, বইমেলা করতে গেলে পুরসভাকে বিধিমাফিক কর চুকিয়ে দিতেই হবে।
মিলনমেলা প্রাঙ্গণের জন্য বাণিজ্যিক হারে প্রথমে দৈনিক ১২ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করেছিল রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দফতর। গত বছর ভাড়া কমানোর আর্জি নিয়ে সরকারের দ্বারস্থ হয় বাণিজ্য মেলার উদ্যোক্তা এক বণিকসভা। সরকার তখন মিলনমেলার ভাড়া এক ধাক্কায় অর্ধেক কমিয়ে দৈনিক ৬ লক্ষ করে দেয়। গিল্ড সে সময়ে বলেছিল, কোনও মতেই তাদের পক্ষে ওই ভাড়ায় বইমেলা করা সম্ভব নয়। পরে বুদ্ধবাবুর নির্দেশে গিল্ডকে ‘স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন’ ঘোষণা করে দৈনিক ভাড়া তিন লক্ষ টাকা করা হয়। তা দিতেও রাজি হয়নি গিল্ড। তাদের আবদারে মাঠের বাণিজ্যিক ভাড়াও ১ কোটি ৫২ লক্ষ থেকে কমিয়ে ২৫ লক্ষ টাকা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
গিল্ডের যুগ্ম সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে বলেন, “মিলনমেলা কর্তৃপক্ষকে গত বছরই ৫০ হাজার টাকা আগাম দিয়েছিলাম। ভাড়া বাবদ ২৫ লক্ষ টাকাও দিয়েছি।” মিলনমেলার মাঠে স্টল তৈরি শুরু হয়ে গিয়েছে। দমকলের সুপারিশ মেনে মেলার মধ্যে রাস্তা প্রশস্ত রাখতে এ বছর স্টলের সংখ্যা কমেছে ৪৭টি। গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানান, এ বছর মোট ৭৯০টি স্টল হবে। তবে, বইয়ের স্টল বাদ পড়ছে না। বই ছাড়া অন্যান্য যে সব সামগ্রীর স্টল হয়, তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার দমকলের অফিসারদের নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করেন দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান। তাঁদের সুপারিশে শেষ মুহূর্তে মেলার মাঠের নকশার কিছু রদবদল করা হয়। এ বার অনেক বেশি জায়গা খালি রাখা হয়েছে। বইমেলায় ব্যাপক ভিড়ের কারণে সুষ্ঠু ভাবে গাড়ি রাখা সব সময়েই বেশ কঠিন হয়। ত্রিদিববাবু জানিয়েছেন, কলকাতা পুলিশ এ বছর মাঠের কাছেই পার্কিংয়ের আরও দু’টি জায়গার সন্ধান করেছে। সেগুলি চূড়ান্ত হলে যানবাহনের ভিড় সামলানো অনেক সহজ হবে।
তবে, একটা দুশ্চিন্তা গিল্ডের পিছু ছাড়ছে না। তা হল, পুরসভার বকেয়া প্রমোদ-কর। ২০০০ সাল থেকে পুরসভাকে ওই কর মেটায়নি গিল্ড। ফলে পুরসভার প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা পাওনা। মেয়রের কাছে কর ছাড়ের দরবার করে লাভ হয়নি। তাই এ বারও ত্রিদিববাবু কর ছাড়ের জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দরবার করেছেন। ফলে, বিষয়টি নির্ভর করছে তাঁর সিদ্ধান্তের উপরে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য ফের জানিয়ে দিয়েছেন, “কেউ প্রমোদ-কর দেব না বলে ঠিক করে নেবে, এটা চলতে পারে না। পরিষেবা-কর দিয়েই পুরসভা চলে। মেলা করতে গেলে কর দিতেই হবে। এই কথাটা আমি গিল্ডকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই।” |
|
|
|
|
|