কর নিয়ে ভোডাফোন বনাম কেন্দ্রের আইনি লড়াইয়ে অবশেষে ভোডাফোনের পক্ষেই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। শিল্পমহলের আশা, শীর্ষ আদালতের এই রায়ের ফলে ভারতের কর ব্যবস্থা নিয়ে বিদেশি লগ্নিকারীদের মধ্যে যে সংশয় ও অনিশ্চয়তা কাজ করে, এ বার তা কমবে। যা বিদেশি বিনিয়োগ টানার পক্ষে সহায়ক হতে পারে।
শুক্রবার শীর্ষ আদালতের ঘোষণা, বিদেশের মাটিতে দু’টি বিদেশি সংস্থার মধ্যে মালিকানা হস্তান্তরের দরুন এ ভাবে কর আদায় করার এক্তিয়ার আয়কর দফতরের নেই। একই সঙ্গে, ভোডাফোনের আগাম জমা রাখা ২,৫০০ কোটি টাকা দু’মাসের মধ্যে ৪% সুদ-সহ ফিরিয়ে দিতেও তাদের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি হিসেবে মোবাইল পরিষেবা সংস্থাটি ট্রেজারির কাছে যে ৮,৫০০ কোটি জমা রেখেছিল, ৪ সপ্তাহের মধ্যে তা-ও ফেরাতে হবে।
এই রায়ের জেরে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি কী ভাবে পোষানো যাবে, তা নিয়ে চিন্তিত কেন্দ্র। তাই রায় ঘোষণার পরেই আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ ও ক্যাবিনেট সচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। রায় খতিয়ে দেখতে ১০ সদস্যের কমিটি তৈরির কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদও।
২০০৭-এ হাচিসন-এসারে হংকং-ভিত্তিক হাচিসনের ৬৭% শেয়ার প্রায় ১,১০০ কোটি ডলারে কেনে ব্রিটিশ বহুজাতিক ভোডাফোন। কিন্তু এ জন্য কেন্দ্রকে কর দেয়নি তারা। তাদের দাবি ছিল, এই অধিগ্রহণ দু’টি বিদেশি সংস্থার মধ্যে চুক্তি। তা সইও হয়েছে বিদেশে। ফলে, এ জন্য কর দাবি করতে পারে না কেন্দ্র। আর তা করলেও, করা উচিত বিক্রেতার থেকে। ক্রেতা (ভোডাফোন)-র থেকে নয়। অন্য দিকে পর্ষদের দাবি, ব্যবসার বড় অংশ ভারতে হওয়ায় ১২ হাজার কোটি টাকা কর (জরিমানা-সহ) তাদের প্রাপ্য। এর বিরুদ্ধে বোম্বে হাইকোর্টে হলফনামা দেয় ভোডাফোন। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে কর বসানো যুক্তিসঙ্গত বলে রায় দেয় বোম্বে হাইকোর্ট। তার পরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় তারা। |