|
|
|
|
দ্বন্দ্ব দুর্গাপুরে |
আইএনটিটিইউসি অফিসে ‘হামলা’, অভিযুক্ত তৃণমূলই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
আইএনটিটিইউসি অফিসে দলবল নিয়ে ঢুকে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রদেশ তৃণমূল সদস্য শঙ্করলাল চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সিটি সেন্টারের ঘটনা। শঙ্করলালবাবু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনে দলের উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত অল বেঙ্গল সিকিউরিটি অ্যান্ড অ্যালায়েড ওয়ার্কসমেন ইউনিয়নের মহকুমা কার্যকরী সভাপতি খন্দকার পারভেজ আলি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, শঙ্করলালবাবুর নেতৃত্বে এক দল যুবক অফিসে ঢুকে এ দিন দুপুরে তাঁকে নিগ্রহ করে এবং হুমকি দেয়। তাঁর অভিযোগ, সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে বিভিন্ন বাস থেকে জোর করে তোলা আদায়ের প্রতিবাদ করায় তাঁকে এমন করা হয়েছে। অন্য দিকে, শঙ্করলালবাবুর পাল্টা দাবি, “পারভেজ আলি দলের নাম করে তোলা আদায় করে। তার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।”
ঘটনার সূত্রপাত বাস মালিকদের একটি সংগঠনের পদাধিকার নিয়ে। দুর্গাপুর বাস মালিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশন গড়ে ওঠে ২০০৭ সালে। সাতটি জেলা জুড়ে ২৪৯টি বাস চলে। সেই সব বাসের মালিকেরা এই সমিতির সদস্য। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে সমিতির বিভিন্ন পদে পরিবর্তন চেয়ে দাবি জানাতে থাকেন তৃণমূল মনোভাবাপন্নেরা। শেষ পর্যন্ত তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের জেলা সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় একটি ‘অ্যাড হক কমিটি’ গড়া হয়। ঠিক হয়, নির্বাচনের মাধ্যমে পদাধিকারী নির্বাচিত হবেন। বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব পান শঙ্করলালবাবু। নির্বাচনের দিন ঠিক হয়। কিন্তু ভোটার তালিকা নিয়ে অসন্তোষ থাকায় সদস্যদের একাংশ আদালতে মামলা করে। নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। এই অবস্থায় দুর্গাপুর বাস মালিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনের নামে চালু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি আপাতত স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে চিঠি পাঠান সংস্থার পূর্বতন পদাধিকারীরা।
সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি দিন বাস পিছু ১০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়। সব মিলিয়ে তা দৈনিক প্রায় আড়াই হাজার টাকা। সেই টাকায় সংস্থার অফিসের কর্মীদের খরচ, রাস্তায় বিভিন্ন মোড়ে ‘টাইম কিপার’দের বেতন, বিভিন্ন সামাজিক কাজ করা হয়। যেহেতু সংস্থায় বর্তমানে কোনও স্থায়ী কার্যকরী কমিটি নেই এবং ব্যাঙ্কে আমানতে লেনদেন স্থগিত, কাজেই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই চাঁদা নেওয়া যাবে না বলে দাবি করেন মালিকদের একাংশ। কিন্তু নিয়ম বদলায়নি। নিয়ম করে চাঁদা আদায় চলতেই থাকে। সংস্থার পূর্বতন সভাপতি মানিক সরকার বলেন, “ওই অর্থ কী হচ্ছে, কোথায় যাচ্ছে, কেউ জানেন না। ১৯ ডিসেম্বর থেকে ব্যাঙ্ক আমানত স্থগিত করা হয়েছে। কাজেই ওই অর্থ কারও ব্যক্তিগত হেফাজতে রাখা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।”
আইএনটিটিইউসি নেতা খন্দকার পারভেজ আলির অভিযোগ, “বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই চাঁদা নেওয়া যাবে না বলে আমরা জানিয়ে দিই। আমাদের দলের নেতা শঙ্করলাল চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ওই ভাবে অবৈধ অর্থ আদায়ের কাজ চলছে। আমরা বিরোধিতা করেছি বলে আমাদের উপরে হামলা হল।” শঙ্করলালবাবু অবশ্য জানান, কোনও হামলা হয়নি। তিনি বলেন, “পারভেজ আলি ও তার সঙ্গীরা সিটি সেন্টারের বিভিন্ন জায়গায় তোলা আদায়ে জড়িত। এ দিন আমি বারণ করতে গিয়েছিলাম।” উল্টে তাঁর দাবি, পারভেজ তৃণমূলের কেউ নয়, সিপিএমের ঘনিষ্ঠ। জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনে দলের উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন। দলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ চলছে। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” |
|
|
|
|
|