অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
আমরি কাণ্ডের জের চলছে জলপাইগুড়িতে। আগুন প্রতিরোধের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় পুরসভার ‘শাস্তির’ মুখে পড়তে চলেছে জলপাইগুড়ি শহরের বেসরকারি নার্সিংহোমগুলি। পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহ, সিনেমা হল, সভাঘরের কর্তৃপক্ষকে নোটিশ ধরাতে চলেছে পুরসভা। কলকাতার আমরি কাণ্ডের পরে শহরের বেসরকারি নার্সিংহোমগুলি তারা পরিদর্শন করে। আগুন প্রতিরোধ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে অসন্তুষ্ট হয়ে কেন ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে না, জানতে চেয়ে শহরের তিনটে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে শো কজ করে পুরসভা। শোকজের জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে নার্সিংহোমগুলির কতৃপক্ষকে শুনানিতে ডেকেছিল জলপাইগুড়ি পুরসভা। শহরের তিনটে নার্সিংহোমের মধ্যে দুটির শুনানি হয়ে গিয়েছে। পুরসভা সুত্রে জানা গিয়েছে, শুনানিতেও সন্তুষ্ট হতে পারেনি পুর কতৃপক্ষ। সে কারণেই নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পরিষেবা অব্যাহত রাখার কারণেই নার্সিংহোমগুলির লাইসেন্স বাতিল করতে রাজি নয় পুর কর্তৃপক্ষ। নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে তা স্থির করতে জরুরি বৈঠকেও বসতে চলেছেন তাঁরা। পুরসভার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনকে বিস্তারিত রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে। শুনানি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আজ মঙ্গলবার ফের জেলা প্রশাসনকে রিপোর্ট পাঠিয়ে তাদের মতামতও চাইবে পুরসভা। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “শো কজের ক্ষেত্রে যে ধরনের দায় এড়ানো উত্তর পাওয়া গিয়েছিল, শুনানিতেও সেই একই ধরনের উত্তরই পাওয়া গিয়েছে। সে কারণেই শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। জেলা প্রশাসনকেও বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো হবে।” পুরসভা সুত্রে জানা গিয়েছে, শুনানিতে এসে নার্সিঙহোম কতৃপক্ষ সবক্ষেত্রেই ‘হচ্ছে, ‘হবে এধরনের বয়ান দিয়েছে. কোনও নার্সিংহোম কতৃপক্ষই তাদের ফায়ায় লাইসেন্স দেখাতে পারেনি, সর্বোপরি নার্সিঙহোমের ভবনগুলির নকশারও সর্বশেষ ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি. আগুন প্রতিরোধ ব্যবস্থা বলতে দেওয়ালে ঝোলানো কয়েকটি অগ্নিনিরোধোক রাসায়নিকের সিলিন্ডার এবং সর্তক ঘন্টি ছাড়া কিছুই নেই. আমরিকাণ্ডের পরে একমাসের বেশি সময় কেটে গেলেও বেসরকারি নার্সিঙহোমে যথাযথ আগুন প্রতিরোধের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কতৃপক্ষ তেমন উদ্যোগ নেয়নি বলে পুরসভার তৈরি করা রিপোর্টে উল্লেখ্য করা হয়েছে।সে কারনেই নার্সিঙহোম নিয়ে ‘কড়া’ পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে পুরসভা.। তবে শহরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমের কর্ণধার বলেন, “একটি প্রক্রিয়া যখন চলছে সে সময় সরাসরি কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে এ কথা বলতে পারি, আমরা সব ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। রাতারাতি তো আর কিছু হয়ে যায় না। একটু সময় লাগবেই।” যদিও পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা পরিদর্শনকারী দলের প্রধান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “আমরা সব দিক খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্তে এসেছি। কর্তৃপক্ষদের পর্যাপ্ত সময়ও দেওয়া হয়েছিল।” শুধু নার্সিংহোমই নয়, শহরে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহের আগুন প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়েও উদ্যোগী হয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। আমরি কাণ্ডের পরে পুরসভার নিজস্ব সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, শহরের কোনও প্রেক্ষাগৃহেই আগুন লেগে লেগে জরুরি অবতরণ অথবা আগুন নেভানোর ব্যবস্থা নেই। তাই প্রেক্ষাগৃহ বা বিভিন্ন মঞ্চের কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। |