বালুরঘাটে হাসপাতালে গ্যাস জ্বেলে পিকনিক করেছিলেন কর্মীরা। আর কোচবিহার জেলা সদর এমজেএন হাসপাতালের বহির্বিভাগের ঘর দখল করে বসানো হয়েছে মুদির দোকান। তাও আবার হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের সমবায়ের মোড়কে। যেখানে ভোজ্য তেল থেকে শ্যাম্পুর পলি প্যাকেট, হরেক দাহ্য পণ্য থরে থরে সাজানো। আমরি কাণ্ডের পরেও জেলায় হাসপাতালগুলো যে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিয়ে এতটুকু সচেতন হয়নি ওই ঘটনায় তা আবার সামনে এসে পড়েছে। সোমবার কোচবিহার জেলা সদরের ওই হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য প্রকাশ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ভর্ৎসনাও করেন। |
রুদ্রনাথবাবু বলেন, “আমরির পরেও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে সতর্ক হয়নি তা ওই মুদিখানার দোকান থাকার ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে। ওই দোকানে যে পরিমাণ ভোজ্য তেল রয়েছে তা উদ্বেগজনক। এমনটা কোথাও দেখিনি। কিছু কর্মী সমবায়ের মাধ্যমে ওই দোকান দীর্ঘদিন ধরে চালাচ্ছেন বলে হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন। কোন নির্দেশনামায় তা চলছে সেটা জানতে চেয়েছি। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে সিএমওএইচকে বলা হবে।”
হাসপাতালের সুপার কল্যাণ দে বলেন, “কর্মীরা ১৯৮৬ সাল থেকে সমবায় করে ওই দোকান চালাচ্ছেন। আমি তা বন্ধের চেষ্টা করেছিলাম। কাজ হয়নি।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানিকলাল দাস বলেন, “ওই দোকান বন্ধ করার ব্যাপারে উদ্যোগী হব।” এদিন দুপুরে স্বাস্থ্য বিষয়ক স্টান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ছাড়াও সদস্য শশী পাঁজা, সুনীল মণ্ডল, নুরজ্জামান চৌধুরী, গোলাম রব্বানি নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে নিয়ে ওই হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। শিশু বিভাগ, প্রসূতি বিভাগ, অন্তর্বিভাগের বিভিন্ন ঘর ঘুরে তাঁরা বহির্বিভাগে যান। সেখানকার একটি ঘরে ওই মুদিখানা খোলা দেখে সকলে সেখানে ঢুকে পড়েন। ভোজ্য তেল-সহ দাহ্য পণ্যের বিপুল সম্ভার দেখে তাজ্জব বনে যান তাঁরা। সেখানেই সুপারের কাছে কার নির্দেশে, কারা ওই দোকান চালাচ্ছেন সে সব নিয়ে বিশদে জানতে চান স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। পাশপাশি হাসপাতাল চত্বরে দাঁড় করিয়ে রাখা মোটর সাইকেলের লাইন দেখেও উদ্বিগ্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, “মোটর সাইকেলে পেট্রোল থাকে। ফলে যেভাবে তা রাখা হচ্ছে তা উদ্বেগের। এসব ঘাটতি মেটাতে হবে।” সমস্ত জেলা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে সিসিটিভি বসানো ও নিরাপত্তা জোরদার করার ব্যাপারেও জোর দেওয়ার কথা জানান রুদ্রনাথবাবু। বালুরঘাট প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “ওই ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতর তদন্ত করছে।” |