আমরি-কর্তা রাধেশ্যাম অগ্রবালের জামিনের আর্জি ফের খারিজ করল আদালত। সোমবার আলিপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। রাধেশ্যামবাবুকে এসএসকেএম হাসপাতালেই পাঠানো হয়েছে।
এ দিন সন্ধ্যায় বিচারক চৌধুরী হেফাজত করিম তাঁর নির্দেশে জানান, মামলার গুরুত্ব বিচার করে অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করা হল। জেল হেফাজতে থাকাকালীন চিকিৎসকের উপস্থিতিতে আমরি-কর্তাকে তদন্তকারী অফিসাররা জেরা করতে পারবেন। কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ)-কে অভিযুক্তের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।
গত ১৩ জানুয়ারি আলিপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক রাধেশ্যামবাবুর জামিন খারিজ করেছিলেন। অর্থাৎ সাত দিনের মধ্যে দু’-দুবার তাঁর জামিন নাকচ হল। এই পরিস্থিতিতে আমরি-র ওই অসুস্থ ডিরেক্টরের তরফে হাইকোর্টে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এ দিন আদালত চত্বরে দাঁড় করানো অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট ওকালতনামায় তিনি সই করেছেন বলে আদালত সূত্রের খবর।
এসএসকেএম থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে রাধেশ্যামবাবুকে এ দিন দুপুর দু’টো নাগাদ আলিপুর কোর্টে আনা হয়েছিল। তাঁর আইনজীবী এসকে কপূর এবং সেলিম রহমান বিচারককে জানান, বারবার আবেদন সত্ত্বেও এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন অভিযুক্তকে সাধারণ বেড থেকে কেবিনে স্থানান্তরিত করা হয়নি। উপরন্তু তিনি শাকাহারী, হাসপাতালের পেঁয়াজ-রসুন দেওয়া খাবার খেতে পারছেন না, বাড়ির খাবারও পাচ্ছেন না। ফলে কার্যত তাঁকে উপোসী থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রাধেশ্যামবাবুর আইনজীবীরা। আদালতের প্রতি তাঁদের আবেদন, এ অবস্থায় রাধেশ্যামবাবু মানসিক অবসাদগ্রস্তও হয়ে পড়েছেন। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। মক্কেলকে আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরের আর্জিও জানান আইনজীবী কপূর।
অন্য দিকে জামিনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী শক্তি ভট্টাচার্য ও বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের যুক্তি: রাধেশ্যামবাবু যে আমরি ঢাকুরিয়ার দৈনন্দিন কাজকর্মে যুক্ত ছিলেন, সরকারি কাগজপত্রে তার প্রমাণ মিলেছে। আর সেই কারণেই আলিপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক তাঁকে জামিন দেননি। পাশাপাশি এসএসকেএমের তরফে এ দিন আদালতে পেশ করা রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাধেশ্যামবাবুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। ওই রিপোর্ট ও দু’পক্ষের সওয়ালের ভিত্তিতে বিচারক রাধেশ্যামবাবুর জামিনের আর্জি খারিজ করে দেন। তবে তিনি এ-ও জানিয়ে দেন, অভিযুক্তকে হাসপাতালের কেবিনে রাখা কিংবা বাড়ির খাবার দেওয়ার বিষয়ে আদালত কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। এসএসকেএম-কর্তৃপক্ষই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। |