নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
জমি নিয়ে গণ্ডগোলে ভক্তিনগর থানার ওসি পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করছে বলে অভিযোগ তুললেন শিলিগুড়ি পুরসভার ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা। সোমবার রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি সঞ্জয় সিংহের কাছে ওই অভিযোগ করেন ডেপুটি মেয়র। তাঁর অভিযোগ, প্রকাশনগরের গৃহবধূ সায়রা বেগম দুই মেয়ে এবং ছেলের স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে ২৫ বছর ধরে ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছেন। রবিবার তাঁকে মারধর করে জমি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তা নিয়ে অভিযোগ জানালে অভিযুক্ত বিন্দেশ্বর রায় ও তাঁর ছেলে বিজয় গ্রেফতার হন। পরে তাঁরা জামিনে ছাড়া পান। রঞ্জনবাবুর অভিযোগ, মারধরের অনেকদিন আগেই সায়রা বেগম ভক্তিনগর থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে ওসি তা নেননি। বরং জমি বিন্দেশ্বরবাবুর বলে ওসি মত দিয়েছেন বলে রঞ্জনবাবুর অভিযোগ। উত্তরবঙ্গের আইজি বলেন, “জমি কার তা নিয়ে পুলিশ মতামত জানাতে পারে না। তার জন্য আলাদা সংস্থা রয়েছে। আদালত রয়েছে। কিন্তু কারও উপরে হামলা হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। তা ডেপুটি মেয়রকে জানিয়েছি। ভক্তিনগর থানার পুলিশকেও বলে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখব।” ভক্তিনগর থানার ওসি অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকাশনগরে ২৫ কাঠা জমি নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। ওই জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন সায়রা বেগম। তিনি জানান, প্রায় ২৫ বছর আগে বেশ কিছু টাকার বিনিময়ে তাঁর স্বামী সইফুল আনসারিকে বসবাসের জন্য ওই জমি দেন বিন্দেশ্বরবাবু। কয়েক বছর আগে সইফুল বিহারে চলে যান। সায়রার একমাত্র ছেলেও নিখোঁজ হয়ে যায়। তখন থেকে ছেলের স্ত্রী, তাঁর আড়াই বছরের ছেলে, দুই মেয়েকে নিয়ে ওই জমিতে বসবাস করছিলেন তিনি। পুরসভার তরফে সায়রা বেগমের নামে জমির হোল্ডিং নম্বরও দেওয়া হয়। সায়রা বেগম বিদ্যুতের জন্যও আবেদন করেন। সম্প্রতি ওই জমি ফেরত চেয়ে বিন্দেশ্বর রায়, মনজয় সিংহ সহ কয়েকজন হুমকি দিতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। তাঁকে জোর করে তুলে দেওয়ার চেষ্টা হয়। মারধরও করা হয়। বর্তমানে তিনি শিলিগুড়ি হাসপাপাতালে চিকিৎসাধীন। বিন্দেশ্বরবাবুর দাবি, সইফুল চলে যাওয়ার পর জমি ফেরত চেয়ে ওই মহিলাকে দাবি জানানো হয়। তিনি জমির মালিকানা দাবি করে উঠতে চাননি। তা নিয়েই সমস্যা হয়। শুক্রবার কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেল, কাউন্সিলরকে নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে সায়রা বেগমকে থাকার জন্য ২ কাঠা জমি দেওয়ার ব্যাপারে ঠিক হয়। তার পরেই মামলা হয়। বিন্দেশ্বরবাবুর ছেলে বিজয় বলেন, “আমাদের জমির কাগজপত্র রয়েছে। তা পুলিশকে দেখানো হয়েছে। আলোচনায় বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হবে বলে আশা করেছিলাম। তা হয়নি। মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে আমার মাকে হুমকি দেওয়া হয়। এটা মেনে নেব না।” মনজয়বাবু জানিয়েছেন, তাঁরা এলাকার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে ওই জমি বিন্দেশ্বর রায়ের বলে জানেন। তিনি বলেন, “মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। ওই মহিলাকে কেউ উচ্ছেদ করেনি। মারধরও করেনি।” |