পালাবদল রিষড়াতেও লেবুর দল ছাড়ার খবরে ক্ষোভ মালদহ কংগ্রেসে
লাকার বিধায়ক আবু নাসের খান চৌধুরী (লেবুবাবু) দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে চান, এই খবরে মালদহের সুজাপুরের কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ ক্ষোভে ফুঁসছেন। সাধারণত গনি পরিবারের কারও বিরুদ্ধে যে-সব অভিযোগ তোলেন না, লেবুবাবুর বিরুদ্ধে সে-সব কথাই হাটে-বাজারে বলছেন ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। কেউ বলছেন ‘স্বার্থপর’। আবার কারও অভিযোগ, প্রয়াত গনি খানের ভাই লেবুবাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করে কংগ্রেসকে ‘পিছন থেকে ছুরি মারার চেষ্টা’ করছেন।
রবিবার মালদহে কোতোয়ালির বাড়িতে বসে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে তাঁর আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন আবু নাসের। তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, তাদের সঙ্গে বৈঠকে আবু নাসের তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ করতে হবে বলে শর্ত দেন। আর তা জানাজানি হতেই এ দিন সকাল থেকে কালিয়াচক, সুজাপুরের কংগ্রেস কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
কালিয়াচক-২ ব্লক সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এনারুল হক বলেন, “কেউ গনি খানের আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলে আমরা ক্ষমা করব না।” কলিয়াচকের আলিপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য মহম্মদ মিনাজুল হক বলেন, “লেবুবাবুকে সুজাপুরের মানুষ বিশ্বাস করেছিলেন। উনি পিছন থেকে কংগ্রেসকে ছুরি মারছেন।” সুজাপুর-গয়েশবাড়ি অঞ্চলের কংগ্রেস সভাপতি ইমরান আলির দাবি, এলাকার বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যাচ্ছেন জেনে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
অবস্থা সামাল দিতে আজ, মঙ্গলবার বৈঠকে বসছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালুবাবু)। বৈঠক হবে কালিয়াচকে। তিনি বলেন, “বৈঠকের পরেই যা বলার বলব।” নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের ক্ষোভ সামাল দিতে কিছুটা সুর বদলেছেন লেবুবাবুও। এ দিন তাঁর মন্তব্য, “আমি তৃণমূলে এখনই চলে যাচ্ছি, এটা ভেবে সবাই এত কেন লাফালাফি করছে জানি না। এখনই মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করার কোনও প্রশ্ন নেই।” ডালুবাবু বলেন, “কাল মালদহে যাচ্ছি। দাদার সঙ্গে বসে কথা বলব। তার পরেই যা বলার বলব।”
কংগ্রেস পরিচালিত মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি উজ্জল চৌধুরীর কথায়, “লেবুবাবুকে কংগ্রেস থাকার অনুরোধ করা হবে। তার পরেও যদি উনি চলে যান তবে তা দুর্ভাগ্যজনক।” সদ্য তৃণমূলে যাওয়া গনি খানের ভাগ্নি শাহনওয়াজ কাদরি অবশ্য বলেছেন, “আমি এখনও বিশ্বাস করি, লেবু মামা তৃণমূলে ঢোকার ইচ্ছার কথা বলতে পারেন না। তবে মামা তৃণমূলে এলে স্বাগত জানাব।”
লেবুবাবুর তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে তুঙ্গ-জল্পনার মধ্যেই হুগলির রিষড়া পুরসভার পুরপ্রধান শঙ্কর সাউ-সহ চার কংগ্রেস কাউন্সিলরও দল ছাড়লেন। যোগ দিলেন তৃণমূলেই। এক সপ্তাহ আগে পুরসভার আরও চার কংগ্রেস কাউন্সিলর দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন।
সোমবার রিষড়ার রবীন্দ্রভবনে নতুন করে আরও চার জন দল ছাড়ায় ওই পুরসভায় কংগ্রেসের হাতে রইল মাত্র একটি আসন। তবে, এ দিন ওই কাউন্সিলরদের যোগদান মসৃণ হয়নি। এ দিন সভায় উপস্থিত ছিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক সুদীপ্ত রায় এবং তপন মজুমদার। তাঁদের সামনেই ওই চার জনকে দলে না নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী। সভাস্থলে চেয়ার উল্টে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে নতুন পুরপ্রধান কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। হুগলির ১৩টি পুরসভার মধ্যে একমাত্র রিষড়াতেই পুরপ্রধান ছিলেন কংগ্রেসের। গত পুর-নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট করে লড়াই করে। ২৩টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৯টি ও তৃণমূল ৮টি আসনে জিতে পুরবোর্ড গঠন করে। বামফ্রন্টের ছিল ৬টি আসন। কংগ্রেসের ৮ জন যোগ দেওয়ায় তৃণমূলের আসন বেড়ে হল ১৬।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.