পাম্প হাউস খারাপ। মিলছে না জল। ক্ষুব্ধ বসিরহাট পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বার বার জানানো সত্ত্বেও পুরকর্তৃপক্ষ, স্থানীয় কাউন্সিলর, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখছেন না। জল সরবরাহ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে, এমনই অভিযোগ স্থানীয় সিপিএমের। সিপিএম কাউন্সিলর শেখ সহিদুল্লা জানান, শুধু একটি ওয়ার্ডেই নয়, আরও অনেক ওয়ার্ডের মানুষই জল পাচ্ছেন না।
পুরপ্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠিকমত জল সরবরাহের অভাবে কয়েক দিন ধরেই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অধিকাংশ মানুষ পানীয় জল পাচ্ছেন না। স্থানীয় মৈত্রবাগান এলাকার পঞ্চাননতলার পাম্প হাউসটি হঠাৎ অকেজো হয়ে পড়ায় এই অবস্থা। সোমবার সকালে ওই পাম্প হাউসের মেশিন মেরামতির জন্য কর্মীরা কাজ শুরু করলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত মেশিন ঠিক হয়নি। এ দিকে পানীয় জল না পেয়ে রীতিমত ক্ষুব্ধ এলাকার মহিলারা। এমনকী প্রতিবাদেও নেমেছেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামশ্রী মিত্র, অমিয় মণ্ডল বলেন, ‘‘পাঁচদিন হয়ে গেল। এখনও পাম্প হাউসের মেশিন ঠিক না হওয়ায় বাসিন্দারা ভয়ঙ্কর অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন। পানীয় জলের তীব্র আকাল দেখা দিয়েছে।”
অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের সহকারি বাস্তুকার জয়দেব মণ্ডল।তিনি বলেন, “পাম্প হাউসের মেশিন ঠিক করার জন্য লোক পাঠানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে খুব দ্রুত মেরামতির কাজ শেষ হয়ে যাবে।’’ বসিরহাটের পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস নেত্রী কৃষ্ণা মজুমদার বলেন, “পাম্প হাউস খারাপ শোনা মাত্র ওই এলাকার মানুষের জন্য পুরসভা থেকে পানীয় জল পাঠানো হয়েছে। মেশিন ঠিক করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে শীঘ্রই মেশিন ঠিক হয়ে যাবে।” অন্য ওয়ার্ডের মানুষ জল পাচ্ছেন না বলে সিপিএম কাউন্সিলর যে অভিযোগ করেছেন তাও অস্বীকার করেন তিনি।
অন্যদিকে বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুরপ্রধানের তরফে যে জলের গাড়ি পাঠানো হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় নেহাতই কম। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে কর্মী পাঠানো হলেও মেশিন মেরামত হয়নি। কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানানো হলেও তিনি বিষয়টি পুরপ্রধানের দায়িত্ব বলে দায় সেরেছেন।
তৃণমূল কাউন্সিলর পার্থসারথি বসু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে উদ্দেশ্যমূলক বলে মন্তব্য করেন। তাঁর দাবি, পরিকল্পনা করে দু’টি রাজনৈতিক দল তাঁদের হেয় করার উদ্দেশ্যে রাস্তায় নেমেছে। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার কোনও মানে হয় না। কারণ পানীয় জল দেওয়ার দায়িত্ব পুরসভার এবং জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের। সোমবার সকালে আমাকে জানানো হলে দু’টি দফতরকেই দ্রুত পাম্প মেরামতির জন্য বলা হয়েছে।”
সিপিএম কাউন্সিলর জানান, সংশ্লিষ্ট দফতর দু’টি বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেওয়ায় সমস্যায় পড়ছেন এলাকার মানুষ। পানীয় জলের পরিষেবা সর্বত্র চালু রাখার জন্য পুরপ্রধানকে বলেছেন তাঁরা। |