বসিরহাট পুরসভার প্রধান পাম্প হাউসে তালা লাগিয়ে দলীয় পতাকা ঝুলিয়ে দিল তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, দলীয় কাউন্সিলরকে না জানিয়ে কর্মী নিয়োগ করে পাম্প হাউস চালু করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজ, মঙ্গলবার থেকে গোটা শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জল পরিষেবা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকেই জল নিয়ে ‘রাজনীতি’ বন্ধের দাবি তুলেছেন।
যাঁর মদতে সোমবার পাম্প হাউসে তালা ঝোলানো হয়েছে বলে অভিযোগ, বসিরহাটের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সেই তৃণমূল কাউন্সিলর মীরা সরকার মেনে নিয়েছেন, আজ থেকে পানীয় জল পেতে তাঁরও সমস্যা হবে। তা সত্ত্বেও তাঁর দাবি, “জনগণের অসুবিধা হবে বুঝতে পারছি। পাম্প হাউসে চাকরি দিতে না পারায় ওয়ার্ডের ছেলেদের কাছে মুখ দেখাতে পারছি না। আমাকে না জানিয়ে পাম্প হাউস চালু হওয়ায় আমার সম্মানহানি হয়েছে।” তাঁর হুমকি, “পুরপ্রধান এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা না মেটালে তালা খোলা হবে না।” আর বসিরহাটের পুরপ্রধান কংগ্রেসের কৃষ্ণা মজুমদার ঘোষণা করেছেন, “কাল সকাল ১০টার মধ্যে পাম্প হাউসের তালা খোলা না হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের দু’টি পাম্প ডিসেম্বরের মাঝামাঝি খারাপ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে কয়েক বছর আগে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জাপুরে গড়ে তোলা আর একটি পাম্প হাউস দ্রুত চালু করা হয়। মহকুমার ২২টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায় ওই পাম্প হাউসের তোলা জলই সরবরাহ করা হয়। পাম্প হাউসটি গড়া হয়েছে ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাজাহান সর্দারের জমিতে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পাম্প হাউস দেখভালের জন্য শাজাহান এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তাপস কুণ্ডুকে নিয়োগ করে।
মীরাদেবীর স্বামী প্রবীরবাবু ওই এলাকার তৃণমূল নেতা। অভিযোগ, প্রবীরবাবুর নেতৃত্বেই জনা কুড়ি তৃণমূল সমর্থক শাজাহান এবং তাপসবাবুকে বের করে দিয়ে ওই পাম্প হাউসে তালা লাগিয়ে দেয়। তৃণমূলের সমর্থনেই বসিরহাট পুরসভায় ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। কিন্তু মাস দুয়েক আগে পুরসভা কাজ করছে না, এই অভিযোগ তুলে তৃণমূূল সমর্থন প্রত্যাহার করে।
পাম্প হাউসে নিয়োগ নিয়ে কোনও অন্যায় হয়েছে বলে মানছেন না পুরপ্রধান। তিনি বলেন, “কর্মী নিয়োগের বিষয়টি আমার হাতে নয়। বাম পুরবোর্ডের আমলে পাম্প হাউস তৈরি হয়। তখনই ঠিক হয়েছিল, কে কে কাজ পাবেন।” মহকুমা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সহকারী বাস্তুকার জয়দেব মণ্ডল বলেন, “পাম্প হাউসে নিয়োগের নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। সাধারণ ভাবে জমিদাতা কাজ পান। তা ছাড়া, পুরপ্রধান এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর যাঁর নাম প্রস্তাব করেন, তাঁকে কাজ দেওয়া হয়। আমাদের কাছে তাপসবাবুর নাম আসায় তাঁকেই কাজ দেওয়া হয়।” |