|
|
|
|
সবংয়ে একশো দিনের কাজ |
‘মিথ্যে’ নালিশ, জরিমানার নির্দেশ দিলেন ওমবুডস্ম্যান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
একশো দিনের কাজ প্রকল্পে নানা দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের জনৈক কৃষ্ণপ্রসাদ ঘোড়ই। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে যান একশো দিনের কাজের ক্ষেত্রে অভিযোগ খতিয়ে দেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওমবুডস্ম্যান শ্যামলেন্দু পাল। অভিযোগের কোনও সারবত্তা মেলেনি। যে কাজের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল, সেই কাজগুলি ঠিক ভাবেই রূপায়িত হয়েছে বলে সন্তুষ্ট হন ওমবুডস্ম্যান। অভিযোগ ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেই রায় দিয়েছেন তিনি। ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ করায় অভিযোগকারীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন।
ওমবুডস্ম্যান তাঁর নির্দেশে জরিমানার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। যেহেতু অভিযোগ ঠিক নয় তাই ওই খরচ দিতে হবে অভিযোগকারীকেই। এর মধ্যে দিয়ে ওমবুডস্ম্যান এই বার্তাও দিতে চেয়েছেন যে, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য, কারও প্রতি বিদ্বেষ বশত বা কাউকে হেনস্থা করার জন্য অভিযোগ করলে জরিমানা হবে। ভিত্তিহীন অভিযোগ যাচাইয়ে সময় চলে গেলে প্রকৃত অভিযোগের তদন্ত করতে বিলম্ব হবে। এই কারণেই ওমবুডস্ম্যান কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একশো দিনের প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার প্রিয়াঞ্জন দাস জানান, “ওমবুডস্ম্যানের ওই নির্দেশ অভিযোগকারীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণপ্রসাদবাবুর তিনটি অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে যান ওমবুডস্ম্যান। একটি হল বুড়াল গ্রাম পঞ্চায়েতে সুনীল মহাপাত্রের বাড়ি থেকে ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত ২ কিলোমিটার মোরাম রাস্তা। যে রাস্তা সম্বন্ধে অভিযোগ ছিল, স্ট্যাগ মার্কিং নেই, ঠিক মতো রোলার দেওয়া হয়নি ও বোল্ডার মোরাম কম দেওয়া হয়েছে। সরকারি নিয়মে ওই রাস্তাটি ১.৮ মিটার চওড়া ও ৭ ইঞ্চি গভীর করার কথা। মাপার পর দেখা গিয়েছে, রাস্তাটি ২ কিলোমিটারের পরিবর্তে ২.১ কিলোমিটার লম্বা। আর সর্বনিম্ন চওড়ার মাপ পাওয়া গিয়েছে ১.৯ মিটার। কোথাও আবার তা ২.৩ মিটার চওড়াও পাওয়া গিয়েছে। আর গভীরতা ৫ ইঞ্চি থেকে ১০ ইঞ্চি পাওয়া গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় মাটি খুঁড়ে সেই মাপ নেওয়া হয়েছে। যার ছবিও সংগ্রহ করে রাখেন ওমবুডস্ম্যান।
এ ছাড়াও মোহাড় পাকারাস্তা থেকে শীতলদা পশ্চিমবাঁধ বরাবর বিষ্ণুপুর, ভায়া রামভদ্রপুর রথতলার মোরাম রাস্তা নিয়েও অভিযোগ ছিল। সেখানেও ওমবুডস্ম্যান ত্রুটি দেখতে পাননি। আর সাউথপাড়া বালিকা বিদ্যালয় থেকে বেনিয়া রাস্তা পর্যন্ত যে সামাজিক বনসৃজন করা হয়েছে তাতে কোনও বোর্ড লাগানো হয়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন কৃষ্ণপ্রসাদবাবু। ওমবুডস্ম্যান সেখানে গিয়ে বোর্ড রয়েছে বলেই দেখতে পান। সেই ছবিও সংগ্রহ করেন। তিনটি বিষয়েই অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায়, কেন মিথ্যে অভিযোগ করে প্রশাসন ও স্থানীয় কার্য সম্পাদনকারী সংস্থাকে হেনস্থা করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওমবুডস্ম্যান। মিথ্যে অভিযোগের তদন্তে সরকারি অর্থ অপচয় হয়েছে। সময় নষ্ট হয়েছে আধিকারিকদের। তাই অভিযোগকারীকে জরিমানা করেছেন ওমবুডস্ম্যান। |
|
|
|
|
|