সকালে সিসিএফসি মাঠে প্রীতি ম্যাচ, ম্যাচ শেষে মাঠেই প্রচারমাধ্যমের সামনে। এরই মধ্যে ফেসবুকে সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে বার্তা। বিকেলে সামান্য বিশ্রামের পর সোমবার সন্ধ্যায় হাওড়ায় নিজের বাড়িতে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে একেবারে অকপট মনোজ তিওয়ারি। অস্ট্রেলিয়ায় আসন্ন ওয়ান ডে সিরিজ থেকে শুরু করে নিজের ক্রিকেটীয় ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনা, দীর্ঘ আলাপচারিতায় উঠে এল সব কিছুই।
প্র: ফেসবুকে সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে বার্তা দিয়েছেন দেখছি। এত সময় পান?
মনোজ: ওই আর কী। আমাকে যারা ভালবাসে, চায় অস্ট্রেলিয়ায় ভাল করি, তাদের সবাইকে থ্যাঙ্কস। মিডিয়াকেও।
প্র: চারপাশে টেস্ট সিরিজের বিপর্যয় নিয়ে যা চলছে বা অস্ট্রেলিয়ার কোচ মিকি আর্থার আজই বলেছেন, ওয়ান ডে-তেও ভারতকে কচুকাটা করবেন মনে হচ্ছে না গরম কড়াইয়ের মধ্যে গিয়ে পড়বেন?
মনোজ: নাহ, এ সব মনে হচ্ছে না। আমার ফোকাসটা এখন পুরোপুরি অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ান ডে সিরিজে। কাল সল্টলেকে কেকেআর-এর ক্যাম্পে যাব একবার। ২৪ জানুয়ারি শহর ছাড়ছি, তার আগে শেষ সপ্তাহটা টেনিস বলে প্র্যাক্টিস করব মানব স্যরের কাছে। কাল বা পরশু থেকে শুরু। |
প্র: ভারত চেন্নাইয়ে যে শেষ ওয়ান ডে খেলেছিল, তাতে আপনার অপরাজিত সেঞ্চুরি আছে। সেটা ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে প্রথম এগারোয় থাকার গ্যারান্টি দিচ্ছে?
মনোজ: না দিচ্ছে না। চেন্নাইয়ের সেঞ্চুরি নিশ্চয়ই নতুন জীবন দিয়েছিল। কিন্তু ওই সেঞ্চুরি মন থেকে মুছে ফেলেই অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি। অস্ট্রেলিয়ায় শূন্য থেকে শুরু করতে হবে। প্রথমে টি-টোয়েন্টি আছে, তার পর ১ ফেব্রুয়ারি প্রথম ম্যাচ। লম্বা সফর, দশটা ম্যাচ, ফাইনালে উঠলে আরও তিনটে। জানি, লড়াই করে টিমে জায়গা করতে হবে। অস্ট্রেলিয়া ট্যুর যে কোনও ক্রিকেটারের কেরিয়ার গড়ে দিতে পারে। ওখানে ভাল করা না করার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। ভাগ্য একটা ফ্যাক্টর, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যত বেশি পরিশ্রম করবেন, তত কম ভাগ্যের সাহায্য লাগবে। সফরটা আমার কাছে একটা নতুন চ্যালেঞ্জ। পক্ষে কিছু ফ্যাক্টরও থাকছে।
প্র: যেমন?
মনোজ: অস্ট্রেলিয়ায় আগে খেলার অভিজ্ঞতা। ওখানেই প্রথম ওয়ান ডে খেলি, কিন্তু রান পাইনি। গত বছর এমার্জিং টুর্নামেন্টে ওখানেই টিমের হায়েস্ট স্কোরার ছিলাম। ওখানকার উইকেট, পেস আর বাউন্স নিয়ে একটা ধারণা আছে। তা ছাড়া এ বার গতবারের মতো হঠাৎ নোটিশ পেয়ে যেতে হচ্ছে না। যথেষ্ট সময় পেয়েছি। কেকেআর প্র্যাক্টিসে গত বছর জেমস প্যাটিনসন আর ব্রেট লি-কে খেলাটা কাজে দেবে।
প্র: টেস্টে তো গোটা টিমই ওখানে ব্যর্থ। বলা হচ্ছে, ভারতীয়রা পেস আর বাউন্স, কোনওটাই খেলতে পারে না। গোটা দেশ সিনিয়রদের বসানোর দাবিতে সোচ্চার।
মনোজ (থামিয়ে দিয়ে): দাঁড়ান, দাঁড়ান, গোটা দেশ কী বলছে জানি না। ভারতীয়রা অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে পারে না, বিশ্বাস করি না। সচিন, রাহুল, সহবাগ, লক্ষ্মণ-কে রান করেনি অস্ট্রেলিয়ায়? সবার রান আছে। এখন মিডিয়া লক্ষ্মণকে নিয়ে বলছে। অথচ অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়াই প্রথম লক্ষ্মণকে বলেছিল, ‘ভেরি ভেরি স্পেশাল!’ আজ অন্য কথা! খুব খারাপ ফল হয়েছে, মানছি। কিন্তু এটাই শেষ কথা নয়। ওয়ান ডে সিরিজেই আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারি।
প্র: এই সিরিজের পরেই টেস্ট টিমে দুটো জায়গা খালি হবে বলে শোনা যাচ্ছে। টেস্ট দলের প্রথম এগারোয় ঢোকার স্বপ্ন দেখেন না?
মনোজ: নিশ্চয়ই দেখি। ক্রিকেটের সেরা ফর্ম্যাট তো টেস্টই। কিন্তু কখন জায়গা খালি হবে, তা নিয়ে এখনই ভাবছি না। ভাবনায় এখন শুধু ওয়ান ডে। ভাবছি বোলিং নিয়েও। এখন ওয়ান ডে-তে বোলিং করতে পারাটা খুব জরুরি। আমি অস্ট্রেলিয়ায় শুধুই লেগ স্পিন করতে চাই। কারণ ওখানকার উইকেটে বাউন্সটা পাব।
প্র: চেন্নাইয়ের ওয়ান ডে-র আগে মোটিভেশনাল ভিডিও দেখেছিলেন। এ বার সে রকম কিছু?
মনোজ: নাহ, এখনও না। আগে তো ওখানে পৌঁছই, তারপর দেখা যাবে। আপাতত গানের উপর আছি। বিশেষ কিছু নয়, সব রকমের মোটিভেশনাল গান। |