রাতের অন্ধকারে জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কে অস্ত্র দেখিয়ে ট্রাক ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়ছিল কিছু দিন ধরেই। মারধর করে ফেলে দেওয়া হচ্ছিল চালক ও খালাসিদের। গত দু’মাসে মালপত্র-সহ এ ভাবে ট্রাক ছিনতাই হওয়ার অভিযোগও জানিয়েছিলেন ট্রাক পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। শেষমেশ খাস হাওড়া কমিশনারেট এলাকায় একটি মালপত্র ভর্তি ট্রাক ছিনতাইয়ের পরে নড়েচড়ে বসল পুলিশ-প্রশাসন। ঘটনার দিন তিনেকের মধ্যেই উদ্ধার হল পরিত্যক্ত ট্রাক।
এর পরে তদন্তে নেমে রবিবার রাতে ছিনতাই-চক্রের চার জন পাণ্ডাকে গ্রেফতার করেছে হাওড়া সিটি পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে চুরি যাওয়া কিছু মালপত্রও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ তারিখ রাতে খাস হাওড়া শহরের ব্যস্ত এলাকা মন্দিরতলা সংলগ্ন বিদ্যাসাগর সেতুর অ্যাপ্রোচ রোড থেকে অস্ত্র দেখিয়ে ১৫ টন লোহার রড-ভর্তি একটি ট্রাক ছিনতাই করে ১০-১২ জন দুষ্কৃতী। এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর পাঁচলা থেকে অ্যালুমিনিয়ামের গুঁড়ো-ভর্তি একটি ট্রাক ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল। ওই মাসেই জাতীয় সড়কে আরও দু’টি ট্রাক ছিনতাই হয়।
এর পরে খাস হাওড়া কমিশনারেট এলাকায় ট্রাক ছিনতাই হওয়ার ঘটনা ঘটার পরে জোরদার তল্লাশি চালিয়ে দিন তিনেকের মধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ ট্রাঙ্ক রোড থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ট্রাকটি উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তে নেমে রবিবার রাতে বজবজ থেকে উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া ১৫ টন লোহার রড। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় চক্রের চার জন পাণ্ডাকে। পুলিশ জানায়, হাওড়ার শিবপুর থেকে ধরা হয় সেলিম আনসারি ও ছোটু খানকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ ও মহেশতলা এলাকা থেকে ধরা পড়ে স্বরূপ বারিক ও সনৎ দাস।
হাওড়া দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়ক বা রাজ্য সড়কে বমাল ট্রাক ছিনতাই নতুন ঘটনা নয়। গত দু’বছরে প্রায় ১৪টি ট্রাক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশি প্রহরা বেড়ে যাওয়ায় ট্রাক ছিনতাইও কমে যায়। কিন্তু সম্প্রতি শীত পড়তেই একের পর এক ট্রাক ছিনতাইয়ের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ট্রাক ব্যবসায়ীরা।
হাওড়ার ডিসি (ট্রাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, এই চক্রটি মূলত মুম্বই রোড ও হাওড়া শহরাঞ্চলে ট্রাক ছিনতাই করত। আরও জানা গিয়েছে, গত ২৮ ডিসেম্বর পাঁচলার জাতীয় সড়ক থেকে ৬০ টন অ্যালুমিনিয়াম গুঁড়ো-ভর্তি ট্রাক ছিনতাইয়ের যে ঘটনা ঘটে, সেটিও এই চক্রেরই কাজ।” |