শান্তিনিকেতনে বৃদ্ধা খুনে গ্রেফতার কেয়ারটেকারই
বসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা রেণু সরকার খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কেয়ারটেকার উজ্জ্বল তপাদারকে গ্রেফতার করেছে বোলপুর থানার পুলিশ। সোমবার ধৃতের জামিন নামঞ্জুর করে চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বোলপুরের এসিজেএম পীযূষ ঘোষ।
পুলিশের দাবি, জেরার মুখে তাদের কাছে ধৃত উজ্জ্বল রেণুদেবীকে খুনের কথা কবুল করেছেন। তবে খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশও এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাইছে না। বীরভূমের পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা এ দিন বলেন, “রবিবার রাতে উজ্জ্বলকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় তিনি খুন করার কথা স্বীকার করেছেন। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু বলা যাবে না। ওই খুনের ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কি না, বা কী উদ্দেশ্য ওই বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” উজ্জ্বল এলাকায় জমির দালালির সঙ্গে যুক্ত বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে।
রেণুদেবীর মেয়ে অদিতি সরকারেরও সন্দেহ, “এই ঘটনায় জমি মাফিয়াদের হাতও থাকতে পারে।” ঘটনা হল, রেণুদেবীর বাড়িতে লজ তৈরির প্রস্তাবও দিয়েছিলেন উজ্জ্বল। অদিতিদেবীর কথায়, “উজ্জ্বলের উপরে আমাদের এতটাই ভরসা ছিল, মাকে কিছু বললে বলতেন, ‘উজ্জ্বল আছে।’ সেই-ই যদি এমন করে, তা হলে কার উপরে ভরসা করা যায়!”
উজ্জ্বল তপাদারকে বোলপুর আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
শনিবার সকালে শান্তিনিকেতনের বাগানপাড়া এলাকায় নিজের বাড়ির দোতলার ঘরে বিছানার উপর থেকে ৭৮ বছরের রেণুদেবীর নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে ওই বাড়ির কেয়ারটেকার উজ্জ্বলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করে। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকে যে আধপোড়া বিড়ি ও রক্তের দাগ থাকা বালিশ মিলেছে, পুলিশ তা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। ধৃত কেয়ারটেকারের লালা ও হাতের ছাপও নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিহত রেণুদেবীর ভিসেরাও পুলিশ সংরক্ষণ করে রেখেছে। বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, ময়নাতদন্তের সময় রেণুদেবীর নাকের একটি হাড় ভাঙা ও মাথায় রক্ত জমাটের চিহ্ন মিলেছে। যে ঘর থেকে দেহটি উদ্ধার হয়, তার মেঝেয় কাদামাখা একটি পায়ের ছাপও পুলিশ পেয়েছে। একতলার ঘরে আধখোলা ফ্রিজের কাছে রক্তের দাগও মিলেছে।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত শুক্রবার বোলপুর স্টেশনে নেমে রিকশায় রেণুদেবী বাগানপাড়ায় যান। পুলিশ ওই রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলবে। ওই দিনই বিকেলে বোলপুর শহরের বাসিন্দা এক রাজমিস্ত্রিকে রেণুদেবী ৭ হাজার টাকা দেন। ওই রাজমিস্ত্রিই রেণুদেবীর দোতলার মেরামতির কাজ এবং কেয়ারটেকারের ঘর তৈরি করেছিলেন। ওই রাজমিস্ত্রিকে এ দিন পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, বোলপুরের আইসি কমল বৈরাগ্যের নেতৃত্বে আরও একটি তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। তারা এলাকার লোকজনের কথা বলার পাশাপাশি রেণুদেবীর বাড়িতে বহিরাগতদের আনাগোনার বিষয়টিও খতিয়ে দেখবে।
সরকারি আইনজীবী ফিরোজ পাল জানান, আগামী ২০ জানুয়ারি ধৃত উজ্জ্বলকে ফের আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.