প্রয়াত বাবা-মায়ে’র স্মৃতিরক্ষায় কিছু করার ভাবনায় আলোচনায় বসেন তিন-ভাইবোন। পৈতৃক সম্পত্তির টাকার পাশাপাশি নিজেদের শেষ বয়সের জন্য জমানো টাকার একটা অংশ খরচ করার পরিকল্পনা নেন তাঁরা। সেই মতো বুধবার দিনহাটা শহরের গোপালনগর মহেশ সাহা শরণার্থী হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে ১০ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন ওই দুইবোন এবং ভাইয়ের পাঠানো প্রতিনিধিরা। কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা প্রয়াত চিকিৎসক শিশিরচন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী হেনাদেবীর স্মৃতিতে ক্লাসঘর নির্মাণ এবং কৃতী পুরষ্কার চালুর জন্য ওই টাকা দেওয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে ওই চেক তুলে দেওয়ার অনুষ্ঠানে প্রয়াতের বড় মেয়ে নীনা দেব, ছোট মেয়ে শিখা বসু-সহ পরিজনেরা উপস্থিত ছিলেন। |
প্রয়াত শিশিরবাবুর ছেলে বর্তমানে কলকাতার সল্টলেকের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শুল্ক দফতরের অফিসার নিশীথ কুমার রায়। শারীরিক কারণে তিনি হাজির থাকতে পারেননি। শিখাদেবী শিলিগুড়ি এবং নীনাদেবী কলকাতায় থাকেন। প্রধানশিক্ষক নারায়ণ দেব বলেন, “প্রায় ৯ লক্ষ টাকায় একটি ক্লাসঘর শিশিরবাবুর নামে অন্যটি তার স্ত্রী হেনাদেবীর নামে উৎসর্গ করা হবে। বাকি ১ লক্ষ টাকার সুদ থেকে ফি বছর স্কুলের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে কৃতিদের পুরস্কার দেওয়া হবে।” শিশিরবাবু দিনহাটায় বসবাস করতেন। শিক্ষানুরাগী হিসাবেও তার নামডাক ছিল। শিশিরবাবুর বড়মেয়ে নীনা দেবী বলেন, “বাবা’র স্মৃতিরক্ষায় কিছু করার ভাবনাটা জীবিত থাকাকালীন মা প্রথম বলেছিলেন। ১৯৯৫ সালে মা মারা যান। তারপরেই দিনহাটার স্কুলের সঙ্গে বাবার সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে আমরা সকলে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।” বড় বোনের মত খুশি ছোটবোন শিখাদেবীও। তাঁর কথায়, “আমরা দুই বোনই গৃহবধূ। পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রির টাকা আর আমাদের বয়সের জন্য জমানো টাকা মিলিয়ে ১০ লক্ষ টাকা এককাট্টা করি। পরিবারের সবাই পাশে না দাঁড়ালে এটা সম্ভব হত না।” শিখাদেবীর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন অফিসার দিলীপ কুমার বসুও এদিন চেক প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “বাবা-মা’র স্মৃতি রক্ষায় স্ত্রী কিছু করতে চান শুনে ওঁকে উৎসাহ দিই।” |