দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে ওয়াগন তৈরির কারখানা স্থাপনের কাজ চলতি মাসেই শুরু করতে চলেছে রেল মন্ত্রক। এই কারখানা গড়তে প্রথম দফায় ১৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রকল্পটি গত মার্চে রেল বাজেটে ঘোষিত হয়েছিল। প্রায় ৯ মাস পরে প্রকল্পটি রূপায়ণের সিদ্ধান্তে খুশির হাওয়া তৃণমূল শিবিরে। জেলার বিরোধী রাজনৈতিক শিবির অবশ্য এখনও বিষয়টিকে ‘অবাস্তব খবর’ বলেই মনে করছে। জেলার সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন সিপিএম মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাস বলেছেন, “ওয়াগন ফ্যাক্টরি তৈরি কী চাট্টিখানি কথা? বললেই হয়ে গেল! আগে বাস্তবে কাজটা শুরু তো হোক। তার পর দেখা যাবে।”
রেল সূত্রের খবর, বড় একটি জলাশয় ছাড়াও বুনিয়াদপুরে স্টেশন লাগোয়া ৩০ একরের বেশি জমি সুরক্ষিত রয়েছে। বিদ্যুদয়ন-সহ আনুষঙ্গিক কাজ ঠিকাদারের মাধ্যমে করার জন্য টেন্ডার বিলির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বুনিয়াদপুর স্টেশন লাগোয়া রেলের অধিগৃহীত প্রায় ২৫ একর জমিতে ওই কারখানা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহারের ডিআরএম ভূষণ পটেল বলেন, “গত মার্চে রেল বাজেটে এই প্রকল্পের অনুমোদন মেলে। নানা কারণে চূড়ান্ত প্রক্রিয়ার কাজ থেমেছিল। সম্প্রতি প্রথম দফায় এই খাতে ১৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।” বছরে এক হাজার ওয়াগন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ওই কারখানা গড়া হবে বলে ডিআরএম জানিয়েছেন। চলতি মাসের মধ্যেই ওই কারখানা তৈরির কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক দূর্গাদাস গোস্বামীও। তিনি বলেন, “ওই কারখানা তৈরির জন্য বুনিয়াদপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেলের প্রচুর জমি রয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই ওয়াগন কারখানা তৈরির কাজ শুরু হবে।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় গত বছর মার্চে বালুরঘাটে গিয়ে উত্তরবঙ্গের এক গুচ্ছ রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করার পাশাপাশি গঙ্গারামপুর মহকুমার সদর বুনিয়াদপুরে ওয়াগন তৈরির কারখানা গড়ার কথা ঘোষণা করে যান। রেল বাজেটের অন্তর্ভুক্ত হয় প্রকল্পটি। এরপর মে মাসে বিধানসভা ভোট জয়ী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নেন। নতুন রেলমন্ত্রী মনোনীত হন। এ সব কারণে প্রায় ৪ মাস প্রকল্পটির প্রস্তুতি পর্বের কাজ পিছিয়ে যায় বলে রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর। ইতিমধ্যে রেলের তরফে বুনিয়াদপুরে একপ্রস্ত সমীক্ষার কাজ হয়ে গিয়েছে। গঙ্গারামপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন না সেটা আরও একবার প্রমাণ হল। কেননা, ওঁর প্রতিশ্রুতি মতো ইতিমধ্যেই বালুরঘাট-হিলি রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। গঙ্গারামপুর স্টেশন-সহ দেওতলা ও রামপুর রেল স্টেশন উন্নীতকরণের কাজও হাতে নিয়েছে রেল মন্ত্রক। বালুরঘাট রেল স্টেশনকে মডেল গড়ার কাজ চলছে।” বিপ্লববাবুর দাবি, ওয়াগান কারখানা চালু হলে সরাসরি ৫ থেকে ৬ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। বিপ্লববাবুর দাবি, “বিরোধীরা খবর রাখেন না বলে উল্টোপাল্টা কথা বলছেন।” |