লেবার রুমে আয়ারা পেটে ‘চাপড়’ মারায় এক প্রসূতির গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে। এমনকী লেবার রুমে নার্স বা চিকিৎসকদের ডেকে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। বুধবার সকালে ওই প্রসূতি মৃত সন্তান প্রসব করেন। এর পরেই তাঁর স্বামী হাসপাতাল সুপার ও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছেন।
বাঁকুড়া জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ দিন্দা বলেন, “লেবার রুমে আয়ারা ঢুকতে পারেন না। তাঁদের অত্যাচারে কোনও প্রসূতির মৃত সন্তান হলে তা খুবই দুভার্গ্যজনক। সেই সময় লেবার রুমে নার্স ও চিকিৎসক ছিলেন কি না, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষ্ণুপুরের সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষচন্দ্র সাহার নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।” আয়ার চাপড়ে মৃত্যুর অভিযোগ উঠলেও মহকুমা হাসপাতালের সুপার রবীন্দ্রনাথ প্রধানের দাবি, “একজন চিকিৎসক ও নার্স লেবার রুমে ছিলেন। সেখানে আয়া ছিলেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নই। তবে এ দিন সকালে জন্মের সময় শিশুটির গলায় নাড়ি (আম্বিলিক্যাল কর্ড) জড়িয়ে গিয়েছিল। চেষ্টা করেও তা খোলা যায়নি। এতেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।” |
সুলেখা ঘোষ নামের ওই প্রসূতির বাড়ি বিষ্ণুপুর থানার রাধানগর গ্রামে। তাঁর স্বামী রঞ্জিত ঘোষের অভিযোগ, “মঙ্গলবার রাতে স্ত্রী’র প্রসব হওয়ার লক্ষণ দেখা দেওয়ায় বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করি। রাত ১১টায় প্রসব যন্ত্রণা না ওঠা সত্ত্বেও আয়ারা তাঁকে লেবার রুমে নিয়ে যান। বুধবার সকালে তাঁরা খবর দেন, স্ত্রী মৃত সন্তানের জন্ম দিয়েছে। পরে স্ত্রীর কাছে জানতে পারি, আয়ারা তাঁর উপরে অত্যাচার চালিয়েছে।” সুলেখাদেবীর অভিযোগ, “তিন জন আয়া আমাকে লেবার রুমে নিয়ে গিয়ে পেটে চাপড় মারতে থাকেন। নার্স ও চিকিৎসক কেউ ছিলেন না। ডেকেও কারও সাড়া পাইনি। আয়াদের অত্যাচারেই আমার সন্তান মারা গিয়েছে।”
রঞ্জিতবাবু বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসককে না পেয়ে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিশীথ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ পত্র জমা দেন। নিশীথবাবু বলেন, “নার্সদের বদলে লেবার রুমে আয়ারা কাজ করছিলেন কেন? হাসপাতাল সুপারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” সুপার অবশ্য অসহায়। তাঁর মন্তব্য,“লেবার রুমে আয়াদের থাকার নিয়ম নেই। কিন্তু মাঝে মধ্যেই আয়ারা সেখানে ঢুকে পড়েন। বারবার বারণ করা সত্বেও তাদের আটকানো যায়নি। উল্টে অনেকবার আমাকেই ওরা চোখ রাঙিয়েছে।” |