বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে সরকারি হাসপাতাল চালাতে আগ্রহী রাজ্য সরকার। বুধবার এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তাঁর আহ্বান, “আপনারা কয়েকটা সরকারি হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিলে আমি খুব খুশি হব। আপনারা আপনাদের নিষ্ঠা দিন। বাদবাকি সব জোগান দেবে সরকার।” রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় চিকিৎসা কেন্দ্র ও ল্যাবরেটরি গড়ে তোলার ব্যাপারে শিল্পপতিদেরও সাহায্য চান মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন জোকায় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের হাসপাতালের দ্বিতীয় পর্যায়ের উদ্বোধন করেন মমতা। এই পর্যায়ে একটি ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিট, একটি হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট এবং একটি মেডিসিন ওয়ার্ড চালু হল। এই উদ্যোগের প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যৌথ উদ্যোগে কাজ করলে অল্প সময়ের মধ্যেই অনেকটা পথ এগোনো সম্ভব। অনেক গ্রামের আশেপাশে কোনও হাসপাতাল নেই। বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি সেই কাজে এগিয়ে আসতে পারে। শিল্পপতিদেরও এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করব।” পিছিয়ে পড়া জেলাগুলিতেও সরকার যৌথ ভাবে কাজ করতে আগ্রহী বলে জানান তিনি। প্রতিশ্রুতি দেন, জেলা স্তরে ধাপে ধাপে ২৬টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। |
বেসরকারি হাসপাতালে অনাবশ্যক খরচের বিষয়টিও আসে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে। বিভিন্ন হাসপাতাল কী ভাবে রোগীদের ঠকিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার বিল ধরিয়ে দেয়, সেই বিষয়ে তাঁর কাছে নানান তথ্য আসছে বলে জানান মমতা। তিনি বলেন, “কোথাও কোথাও মৃত মানুষকে ভেন্টিলেটরে রেখে অস্ত্রোপচার হয় বলে শুনেছি। এখনই কিছু বলছি না। তদন্ত করে নিশ্চিত হয়ে তার পরেই এ বিষয়ে যা বলার বলব।”
গত ৩৪ বছরে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো অতলে ডুবে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, তাঁর সরকার প্রথম কয়েক মাসেই যে-কয়েকটি বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য তার অন্যতম। তাঁর দাবি, গত ছ’মাসে রাজ্যে শিশুমৃত্যুর হার আগের তুলনায় দুই শতাংশ কমেছে। তিনি বলেন, “এর জন্য আমি গর্বিত নই, লজ্জিত। কারণ, আরও অনেকটা পথ এগোনো বাকি। মৃত্যুর হার আরও ২০-২৫ শতাংশ কমিয়ে আনব, এটা আমার চ্যালেঞ্জ।”
এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক স্বামী বিভিদিশানন্দ, যুগ্ম সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ, জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায়, রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। |