নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
রাতের অন্ধকারে ট্যাঙ্কারের ‘সিল’ খুলে স্পিরিট চুরির একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে শিলিগুড়িতে। নকল বিদেশি মদ তৈরির জন্য তাছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে চোরাবাজারে। মঙ্গলবার রাতে প্রধাননগরের বিআরআই কলোনিতে একটি ট্যাঙ্কার থেকে স্পিরিট বার করার সময় ১ জনকে হাতেনাতে ধরে পুলিশ। তার পরেই ওই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। ধৃতের নাম বিজেন্দ্র কাপুর ওরফে মাসুম। তার বাড়ি প্রধাননগরে। নভেম্বরেও একই ভাবে স্পিরিট চুরির সময় একটি ট্যাঙ্কার ধরে আবগারি দফতর। সেই মামলাতেও মাসুম অভিযুক্ত ছিল। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “আরও কারা জড়িত রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাড়ির চালক ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে আমাদের সন্দেহ। সে পালিয়ে যায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” বাগডোগরা, মাটিগাড়া, চম্পাসারি, সুকনা, কার্শিয়াং সহ পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন এলাকায় নকল মদ বিদেশি মদ তৈরির বেআইনি কারখানা রয়েছে। স্পিরিট, রং সহ বিভিন্ন রাসায়নিক মিশিয়ে নকল বিদেশি মদ তৈরি করে সেগুলি বাজারে ছাড়া হয়। আবগারি দফতরের শিলিগুড়ি সার্কেলের ওসি বিশ্বজিৎ ভক্ত বলেন, “স্পিরিট চোরাই চক্রের সঙ্গে যুক্ত অভিযোগে মাসুমকে দীর্ঘদিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল। পাশাপাশি কোথায় ওই স্পিরিট বিক্রি করা হয় তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।” আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সিকিমের মানপুরে একটি স্পিরিট তৈরির কারখানা রয়েছে। সেখান থেকে ২০০০ লিটারের ট্যাঙ্কার ভর্তি করে স্পিরিট ভর্তি করে উত্তর-পূর্বের অসম, মেঘালয় সহ বিভিন্ন রাজ্যে পাঠানো হয়। সেখানে বিদেশি মদ তৈরির কারখানায় স্পিরিট কাজে লাগানো হয়। নিয়ম অনুযায়ী, সিকিমে সেই রাজ্যের আবগারি দফতরের এক অফিসারের সামনে ট্যাঙ্কারে স্পিরিট ভর্তি করে সিল লাগানো হয়। ট্যাঙ্কার নির্দিষ্ট স্থানে যাওয়ার পর সেখানকার আবগারি দফতরের অফিসারের সামনে ওই ‘সিল’ খোলা হয়। কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে শিলিগুড়িতে ট্যাঙ্কারের ‘সিল’ খুলে স্পিরিট চুরির চ ক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। ট্যাঙ্কার থেকে ৮০০ থেকে ১ হাজার লিটার স্পিরিট চুরির পর সেখানে একইরকম ভাবে ‘সিল’ লাগিয়ে দেওয়া হয়। নকল ‘সিল’-এর জন্য পারদর্শী কয়েকজন ওই চক্রের সঙ্গে রয়েছে। গত নভেম্বরের ১৮ তারিখে দাগাপুর থেকে একটি ট্যাঙ্কার আটক করে আবগারি দফতরের কর্মীরা। সেখান থেকেও একই ভাবে স্পিরিট বের করে নেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। |