নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুরদুয়ার |
শিক্ষা দফতরের নির্দেশে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল উঠে গেলেও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের গাফিলতিতে এ বার চালু করা গেল না আলিপুরদুয়ারে। গত নভেম্বর মাসে শিক্ষা দফতর ওই নির্দেশ জারি করে। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ওই নির্দেশ পৌঁছে যাওয়ার পরে ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষার সময়ে বেশির ভাগ স্কুলে কোনও ছাত্রকেই ফেল করানো হয়নি। ব্যতিক্রম আলিপুরদুয়ার। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর থেকে এ সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ না-পৌঁছানোয় মহকুমার বিভিন্ন স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফল ঘোষণার সময়ে বেশ কিছু ছাত্রছাত্রীকে অকৃতকার্য ঘোষণা করা হয়। ওই ঘটনায় মহকুমার বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং অভিভাবক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার কালচিনি ইউনিয়ন অ্যাকাডেমি গার্লস স্কুলে ফল ঘোষণার পরে এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে আলিপুরদুয়ার অভিভাবক মঞ্চ। অথচ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক শাখার ডেপুটি সেক্রেটারি দেবাশিস দত্ত জানিয়েছেন, নভেম্বর মাসে শিক্ষা দফতর থেকে অষ্টম শ্রেমি পর্যন্ত পাস-ফেল তুলে দেওয়ার নির্দেশ প্রতিটি জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জলপাইগুড়ির জেলা ভারপ্রাপ্ত স্কুল পরিদর্শক গজেন রায় বলেন, “আমরা দেরিতে ওই নির্দেশিকা হাতে পেয়েছি। এ বার তা আলিপুরদুয়ার মহকুমায় পাঠানো হবে।” বার্ষিক পরীক্ষার ফল ঘোষণার পরে ওই নির্দেশিকা কী ভাবে মানা হবে তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন মহকুমার বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শ্বেতা বসু বলেন, “আমাদের হাতে কোনও সরকারি নির্দেশ নেই। সেই জন্যই স্কুলে পাশ-ফেল তোলা যায়নি। কয়েকজন ছাত্রী অকৃতকার্য হয়েছে। একই অবস্থা সলসলবাড়ি এবং ম্যাকইউলিয়ম হাই স্কুলেরও। সলসলাবাড়ি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মৃদুলকান্তি মিত্র বলেন, “নির্দেশিকা হাতে না-পেলে পাশ-ফেল তুলে দিই কী করে।” আলিপুরদুয়ার অভিভাক মঞ্চের সম্পাদক ল্যারি বসু বলেন, “গোটা রাজ্য জুড়ে সরকারি নির্দেশ পৌঁছে গেল।আর আলিপুরদুয়ারেই তা পৌঁছল না? সরকারি আধিকারিকদের এই ধরনের গাফিলতি মানা যায় না। কার গাফিলতিতে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের একটা বছর নষ্ট হল তা জানতে চেয়ে আমরা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে ফ্যাক্স পাঠাব।” নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির আলিপুরদুয়ার পশ্চিম জোনের সম্পাদক বিদ্যুৎ দত্ত জানান, পাশ ফেল প্রথা তুলে দেওয়ার কোনও নির্দেশিকা তাঁরাও পাননি। বিদ্যুৎবাবুর স্কুল ফোসকারডাঙা সরনা আদিবাসী হাই স্কুলে এবারও পাশ ফেল প্রথা মেনে ফল প্রকাশ করা হয়। এসএফআই নেতা সঙ্কেত ভট্টাচার্যের দাবি, সরকারি নির্দেশিকা মেনে সমস্ত স্কুল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে। |