পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের খুদেদের উদ্বাভনাকে স্বীকৃতি দিল জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেস। ২৭-৩১ ডিসেম্বর রাজস্থানের জয়পুরে অনুষ্ঠিত ১৯তম জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে প্রশংসিত হয় তাদের কাজ। পুরস্কার দেওয়া হয় বলরামপুরের সাপুয়া মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের খুদে পড়ুয়াদেরা। ‘ফায়ার ক্লে’ নামের খনিজকে ব্যবহার করে মাটির নীচের সব্জি সংরক্ষণ ও বাড়ির দেওয়াল রঙ করার কৌশল বের করেছে ওই শিক্ষাকেন্দ্রের পাঁচ পড়ুয়া।
সপ্তম শ্রেণির পরেশ কর্মকার, শোভা কর্মকার, নগেন বেসরা, অষ্টম শ্রেণির রাজু কর্মকার ও ষষ্ঠ শ্রেণির সুমন সাউ-এই মডেল তৈরি করেছে। এদের ‘গ্রুপ লিডার’ পরেশের কথায়, “ফায়ার ক্লে জলে গুলে আমরা নানা রঙ তৈরি করেছি। ‘ফায়ার ক্লে’ দিয়ে রঙ তৈরির কারখানা হতে পারে।” ওই পাঁচ পড়ুয়ার প্রকল্প গাইড স্কুলের জীববিদ্যা বিভাগের শিক্ষক গৌতম কুণ্ডু। তিনি বলেন, “আমরা ৯ রকমের রঙ তৈরি করেছি। বাড়ির দেওয়ালে ব্যবহার করেছি। রাসায়নিক যোগ করলে উন্নতমানের জল নিরোধক রঙ তৈরি হতে পারে।” |
‘ফায়ার ক্লে’ ব্যবহার করে মাটির নীচের সব্জি কী ভাবে সংরক্ষণ করা যায়, তা জানাল সুমন, শোভা, নগেনরা। তাদের কথায়, “এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে আলুর ধসা রোগ হয়। ‘ফায়ার ক্লে’ আলুর উপর ছড়িয়ে দেখেছি আলুর শুষ্ক ও সিক্ত পচন ছ’মাস পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখা গিয়েছে। পরে আদা, ওল-সহ মাটির নীচের অন্যান্য সব্জিও একই ভাবে সংরক্ষণ করা যায় কী না তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।” গৌতমবাবু জানান, রাজ্য খনি উন্নয়ন নিগম একসময় বলরামপুর এলাকায় ‘ফায়ার ক্লে’ খনি করেছিল। লাভজনক না হওয়ায় পরে ওই খনি ছেড়ে দেয়। তাই, দৈনন্দিন জীবনে ‘ফায়ার ক্লে’ কী কাজে ব্যবহার করা যায় তা ‘খুদে বিজ্ঞানী’দের ভাবনায় আসে। তা থেকেই এই প্রকল্প তৈরি করা হয়। পুরুলিয়া জেলা শিক্ষণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ সঙ্গীতা চৌধুরী এই প্রকল্পের জেলা সংযোজক। তিনি বলেন, “সারা দেশের বিভিন্ন স্কুল থেকে অনেক প্রজেক্ট জমা পড়েছিল। তার মধ্যে সেরা ৫০টি প্রজেক্ট নির্বাচকরা বাছাই করেন। আমাদের প্রজেক্টটি তার অন্যতম। এই সাফল্য অন্যদের উৎসাহ দেবে।” |