চরম হই হট্টগোলের মধ্যে মুলতুবি হয়ে গেল নদিয়া জেলা পরিষদের উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক।
বুধবার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতিগুলির সভাপতি এবং বিধায়কেরা। কৃষ্ণনগর দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাস সাধারণ সভার সদস্য নন। কিন্তু চিঠি গিয়েছিল তাঁর কাছেও। নিছকই ভুল করে। তিনি অবশ্য সভায় ঢোকেননি। সারাক্ষণই বিরোধী দলনেতার কক্ষে বসেছিলেন। তবে, শেষ পর্যন্ত চরম হই হট্টগোলের মধ্যে সভা মুলতুবি হয়ে যায়। কারণ, সদস্যদের কাছে জেলা পরিষদের উন্নয়ন সংক্রান্ত রিপোর্ট গিয়েছিল এ দিনই। তা পড়ে দেখার সামান্য সুযোগও পাননি তাঁরা। ফলে ওই রিপোর্ট নিয়ে মন্তব্য করার কোনও ‘সুযোগ’ ছিল না তাঁদের। বিরোধীদের দাবি, তিন মাস অন্তর ওই বৈঠক ডাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু গত দশ মাসেও সিপিএমের দখলে থাকা জেলা পরিষদ তা ডাকেনি। তা ছাড়া এত কম সময়ে রিপোর্ট পড়ে মন্তব্য করাও সম্ভব নয়। ফলে সভা এ দিনের মতো মুলতুবি করে দেওয়া সভা। ৯ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী সভার দিন স্থির হয়েছে।
জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের চঞ্চল দেবনাথ বলেন, ‘‘প্রতি তিন মাস অন্তর সাধারণ সভা ডাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু প্রায় দশ মাস পর এই সভা ডাকা হচ্ছে। সাড়ে ছ’শো পাতার যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে তা না পড়ে আমরা কি করে মতামত জানাব? তাই অন্য এক দিন সভা করার দাবি জানিয়েছি।’’
নদিয়া জেলার চার সাংসদই কংগ্রেস ও তৃণমূলের। ১৭ টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ১৫টি তাদের দখলে। আবার বিধানসভা ভোটে ১৭টির মধ্যে মাত্র ৩টি আসনে জয়ী হয়েছে সিপিএম। ফলে স্থায়ী সমিতিগুলিতে সিপিএম সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও সাধারণ সভায় তারা সংখালঘু হয়ে পড়েছে। তাই সাধারণ সভার বৈঠকে যে তাদের চরম বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হবে, তা বিলক্ষণ জানতেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি সিপিএমের মেঘলাল শেখ। তিনি বলেন, ‘‘ উন্নয়ন স্তব্ধ করতেই সাধারণ সভার বৈঠকে গন্ডগোল পাকাচ্ছে তৃণমূল। তবে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে ৯ ফেব্রুয়ারি বৈঠক ডাকছি ফের।’’
রাজ্যের যুবকল্যাণ মন্ত্রী ও জেলা তৃণমূলের সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘জেলার উন্নয়নে কোনরকম বাধা দিতে চাই না। সিপিএম যে সব অবৈধ কাজ করেছে সেগুলো এই সাধারণ সভার বৈঠকে আমাদের দিয়ে অনুমোদন করিয়ে নিতে চাইছিল। তা করতে দেওয়া যায় নাকি!” |