বরাদ্দ টাকা খরচ করতে না পারায় শো-কজ স্কুলকে
টাকা হাতে পেয়েও তার প্রায় অর্ধেক খরচ করতে পারেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। ফলে বাকি টাকা ফেরত চাইল সরকার। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার আমতার রসপুর হাইস্কুলে। এই স্কুলে ২০০৮ সাল থেকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু হয়। সেই খাতেই পরিকাঠামো তৈরি করার জন্য সরকার স্কুলকে টাকা দিয়েছিল। টাকা পেয়েও তারা কেন তা খরচ করতে পারেননি সে বিষয়ে কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে।
বর্তমানে এই স্কুলে দশম শ্রেণি উত্তীর্ণদের জন্য চালু রয়েছে অটোমোবাইল শিক্ষা এবং অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণদের জন্য চালু রয়েছে হেলথ্ ওয়ার্কার শিক্ষা। দু’টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ চালু হয়েছে ২০০৮ সাল থেকে।
ওই বছরেরই গোড়াতে রাজ্যের বৃত্তিমূলক শিক্ষা পরিষদ রসপুর হাইস্কুল কর্তৃপক্ষকে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা দেয়। সেই টাকায় শ্রেণিকক্ষ তৈরি-সহ অন্যান্য পরিকাঠামোর উন্নতি করার জন্য বলা হয়। কিন্তু তিন বছরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ পুরো টাকা খরচ করতে পারেননি। নতুন শ্রেণিকক্ষের বদলে পুরোন শ্রেণিকক্ষেই তারা প্রশিক্ষণ চালু করে দেন। কিছু যন্ত্রপাতি অবশ্য কেনা হয়। প্রশিক্ষকদের বেতন দেয় রাজ্য সরকার।
অডিট রিপোর্ট দেখে বৃত্তিমূলক শিক্ষা পরিষদ জানতে পারে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য পাঠানো টাকার প্রায় অর্ধেক খরচ হয়নি। তার পরেই তারা এই টাকা ফেরত দিতে হবে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়। একই সঙ্গে তারা স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় কেন পরিকাঠামো তৈরির জন্য দেওয়া টাকা খরচ করা গেল না, সে বিষয়টিও লিখিত জানাতে হবে।
প্রধান শিক্ষক পিন্টু দাস বলেন, “যে টাকা দেওয়া হয়েছিল তাতে বাড়ি তৈরি করা যেত না। বর্তমান শ্রেণিকক্ষগুলিকেই সামান্য সংস্কার করে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ চালু হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম, কবে পরবর্তী টাকা পাওয়া যাবে, সেই ভরসায় না-থেকে বাকি টাকা রেখে দেওয়া যাক। জরুরি প্রয়োজনে খরচ হবে। সে কারণেই মোট ২ লক্ষ ১১ হাজার ৫৫২ টাকা আমরা খরচ করিনি।”
এ দিকে, টাকা ফেরত দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পরিচালিত স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক এবং প্রধান শিক্ষকের মধ্যে মত পার্থক্য দেখা দিয়েছে। সম্পাদক জয়ন্ত পোল্যে বলেন, “আমরা দু’মাস হল পরিচালন সমিতিতে ক্ষমতায় এসেছি। দেখলাম পরিকাঠামো খাতে বরাদ্দ করা টাকা খরচ করা হয়নি। অথচ টাকা খরচ করার প্রচুর সুযোগ ছিল। সমিতির পক্ষ থেকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা পরিষদকে চিঠি লেখা হবে যাতে এই টাকা ফেরত না-দিতে হয়। আমরা ওই টাকায় বাকি কাজ করতে চাই।”
অন্য দিকে, প্রধান শিক্ষক বলেন, “আমরা পরিষদের কাছে গিয়েছিলাম। টাকা ফেরত দিতেই হবে। না-হলে পরিষদ বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণকেন্দ্র হিসাবে আমরা তালিকার বাইরে চলে যাব। কিছু করার নেই।”
রাজ্য বৃত্তিমূলক শিক্ষা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু এই স্কুলকেই নয়, টাকা পেয়েও বছরের পর বছর তা খরচ করতে না-পারার নজির আছে বহু স্কুলে। পরিষদের এক কর্তা জানান, বিভিন্ন স্কুলকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা খাতে লক্ষ লক্ষ টাকা সাহায্য দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বহু স্কুল খরচের ক্ষেত্রে অনিয়ম করেছে। অনেকে টাকা পেয়েও কোনও কারণ না-দেখিয়ে বছরের পর বছর তা খরচ করেনি। কেন খরচ করেনি তা পরিষদকে তারা জানানোরও প্রয়োজন মনে করেনি। এ সব আর বরদাস্ত করা হবে না। এই রকম প্রতিটি স্কুলের কাছ থেকে টাকা ফেরত চাওয়া হয়েছে। যারা টাকা খরচের ক্ষেত্রে বেনিয়ম করেছে তাদের সঠিক হিসাব দাখিল করতে বলা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.