নিজস্ব সংবাদদাতা • খানাকুল ও ক্যানিং |
কেশপুর, কেতুগ্রাম, জয়পুরের পরে এ বার ঘটনাস্থল হুগলির খানাকুল। ফের খুন তৃণমূলের এক সমর্থক। অভিযোগ, দলের দুই গোষ্ঠীর মারামারির জেরেই এই ঘটনা। গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূলের ৩ কর্মী-সমর্থককে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ঠাকুরানিচক গ্রামের টুঙ্গিরহাট পাড়ায় খালপাড়ের জমিতে একটি বাড়ি তৈরিকে কেন্দ্র করে গোলমালের সূত্রপাত। যার জেরে মঙ্গলবার রাতে দু’দলের মারামারি বাধে। মাথায় চোট পান স্বপন সানকি (৪৫)। বুধবার ভোরে আরামবাগ হাসপাতাল থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান তিনি। আরামবাগেই দেহের ময়না-তদন্ত হয়।
‘গোষ্ঠী সংঘর্ষের’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে খানাকুলের তৃণমূল বিধায়ক ইকবাল আহমেদ বলেন, “মৃত্যুর ঘটনাটি নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। তবে পুরোটাই গ্রাম্যবিবাদ। দু’তরফেই আমাদের লোকজন থাকতে পারে। |
তখনও বেঁচে স্বপন সানকি। ছবি: মোহন দাস |
তবে দলগত ভাবে গণ্ডগোল হয়নি।” বিধায়ক এই দাবি করলেও মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় জখম স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা দলের আঞ্চলিক কমিটির সদস্য বিমলেন্দু সামন্তের দাবি, এলাকায় ‘প্রভাব-প্রতিপত্তি’ বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছিল দলেরই কয়েক জন। তা থেকেই গোলমাল ছড়ায়।
গ্রামে খালপাড় ও পিচরাস্তার মাঝে খাসজমিতে বাড়ি তৈরির কাজ করাচ্ছিলেন তৃণমূল কর্মী পিন্টু মণ্ডল। গ্রামের এক দল লোকের দাবি, ওই নির্মাণ অবৈধ। পঞ্চায়েতের জমিতে বিনা অনুমতিতে তৈরি হচ্ছে বাড়ি। মঙ্গলবার সকালে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর লোকজন গ্রামবাসীদের একাংশকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। স্থির হয়, ‘অবৈধ’ নির্মাণের প্রতিবাদ করা হবে। রাত ৮টা নাগাদ বিমলেন্দুবাবুরা লোকজন নিয়ে হাজির হন খালপাড়ের বিতর্কিত জমিতে। সেখানে হাজির ছিল অন্য পক্ষের লোকজন। মারামারি বাধে। বিমলেন্দু র দাবি, তৃণমূলেরই অঞ্চল কমিটির সদস্য উজ্জ্বল বাগ লোকলস্কর নিয়ে বোমাবাজি করেছেন। লাঠি, টাঙ্গি নিয়ে হামলা চালানো হয়। উজ্জ্বলবাবুর বক্তব্য, “গ্রামবাসীদের নিয়েই বিমলেন্দুরাই হামলা করতে এসেছিল। আমরা আত্মরক্ষা করেছি।”
স্বপনবাবুর ভাই তপন বলেন, “আমরা বরাবরই তৃণমূল করি। দাদা অত্যন্ত নিরীহ মানুষ। সিপিএমের সন্ত্রাসের সময়েও ওঁর গায়ে কেউ হাত তোলেনি। আর নিজেদের দলের লোকের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়েই কিনা মরতে হল!”
অন্য একটি ঘটনায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের মৌখালিতে তৃণমূলে দুই গোষ্ঠীর মারামারিতে জখম হয়েছেন দলেরই ৪ সমর্থক। চার জনকে ধরেছে পুলিশ। তৃণমূলের জেলা সভাপতি ও কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। দলের স্থানীয় নেতৃত্বের কেউ জড়িত নন। দলগত ভাবে আমরা খোঁজ নিচ্ছি।” |