রেল ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাবে দীনেশকে ফের না মমতার
মিলল না ছাড়পত্র। রেল বাজেটে যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর অনুমতি পেতে মরিয়া হয়ে এক বার শেষ চেষ্টা চালিয়েছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। বিষয়টি নিয়ে কাল তিনি বৈঠকে বসেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কিন্তু লাভ হয়নি। দলনেত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সাধারণ মানুষের স্বার্থ বিঘ্নিত হয়, এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। বাড়ানো যাবে না রেলের ভাড়া। ফলে আপাতত খালি হাতেই কলকাতা থেকে ফিরতে হয়েছে দীনেশকে। রেল মন্ত্রক তাই বলছে, তীব্র আর্থিক সংকটের মধ্যেও ভাড়া সম্ভবত এ বারেও বাড়ছে না।
রেল ভাড়া শেষ বেড়েছিল এনডিএ জমানায় (২০০২-০৩), নীতীশ কুমার রেলমন্ত্রী থাকাকালীন। তার পর থেকে বিভিন্ন মহল নিরন্তর চাপ দিয়ে গেলেও লালু প্রসাদ বা মমতা, রেলমন্ত্রী হিসাবে কেউই ভাড়া বাড়াতে চাননি। অবস্থা এমনই যে একশো টাকা আয় করতে এখন প্রায় একশো টাকাই খরচ হয়ে যাচ্ছে রেলের। এই অবস্থায় ভাড়া বাড়ানো তো বটেই, অ-লাভজনক রেল প্রকল্পগুলি বন্ধ করার জন্যও রেল মন্ত্রককে গত তিন-চার বছর ধরে চাপ দিয়ে যাচ্ছে যোজনা কমিশন। সংসদের বিতর্কেও একাধিক সাংসদ রেলের ভাড়া বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন। এমনকী, সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির রিপোর্টও সায় দিয়েছে ভাড়া বৃদ্ধিতে।
কিন্তু এক দিকে মমতার আপত্তি ও অন্য দিকে ভাড়া বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রক ও যোজনা কমিশনের নিরন্তর চাপ এই দুইয়ের মধ্যে কার্যত ত্রিশঙ্কু অবস্থা এখন রেলমন্ত্রী দীনেশের। মমতার পরামর্শে আয় বাড়ানোর জন্য কয়েকটি বিকল্প পথ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন দীনেশ। কিন্তু আগের বিকল্পগুলির মতো এগুলিও খারিজ হয়ে যাবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
রেলমন্ত্রী হয়েই দীনেশ মন্ত্রকের দুর্দশা ঘোচাতে ভাড়া বাড়ানোর পক্ষে ইতিবাচক পদক্ষেপ করেছিলেন। তাঁর প্রস্তাব ছিল, শুধু বাতানুকূল শ্রেণিতে ভাড়া বাড়ানো হোক। কারণ, ওই শ্রেণির যাত্রীদের অতিরিক্ত অর্থ দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে। কিন্তু মাস কয়েক আগে ওই প্রস্তাব খারিজ করে দেন মমতা। শেষ চেষ্টা হিসাবে কাল তিনি পেট্রোলের মতো ‘ডায়নামিক প্রাইসিং’-এর প্রস্তাব দিয়ে আলোচনা করেন মমতার সঙ্গে। তেল সংস্থাগুলি এখন আন্তর্জাতিক বাজারের দর অনুযায়ী দু’সপ্তাহ অন্তর পেট্রোলের দাম পর্যালোচনা করে। সে ভাবেই ডিজেলের দামের ওঠাপড়া অনুযায়ী রেলের ভাড়া ঠিক করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন দীনেশ। মমতা কিন্তু বিকল্প পদ্ধতিতে অর্থ উপার্জনেই জোর দিতে বলেন দীনেশকে।
কোষাগারের হাল ফেরাতে দূরপাল্লার ট্রেনে ভাড়া ১০-এর গুণিতকে অর্থাৎ ‘রাউন্ড অফ’ করার কথাও ভাবছে মন্ত্রক। রেলের এক কর্তার ব্যাখ্যা, “খুচরো টাকার অভাবে অনেক সময়েই যাত্রী, দু’-চার টাকা কাউন্টারেই ছেড়ে দেন। যা রেলের কোষাগারে জমা পড়ে না। টিকিট রাউন্ড ফিগারে হলে পুরোটাই পাবে রেল।” মন্ত্রকের ধারণা, স্রেফ এ থেকেই বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা আসতে পারে রেলের ভাঁড়ারে। তবে সামান্য হলেও ঘুরপথে এই ভাড়া বাড়ানোর পরিকল্পনাও সবুজ সংকেত পাবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে রেল মন্ত্রকে। তবে যে ভাবে যাত্রী বহন ও পণ্য পরিবহণে লাগাতার ক্ষতি হচ্ছে রেলের, সেটাকে যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে মন্ত্রক। অপারেটিং রেশিও (একশো টাকা আয় করতে যত টাকা খরচ হয়) একশো ছুঁইছুঁই। এই অনুপাত কমিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন দীনেশ।
কী ভাবে? সেই পথই হাতড়ে বেড়াচ্ছে রেল মন্ত্রক।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.