কলকাতা জেলা কমিটি ছোট করতে গিয়ে কোন কোন নেতাকে বাদ দেওয়া হবে, তা নিয়ে সমস্যায় সিপিএম। বার্ধক্য, অসুস্থতা, নিষ্ক্রিয়তা বা ভাবমূর্তির প্রশ্নে জেলা কমিটি থেকে একাধিক নেতাকে বাদ দিয়ে জেলা কমিটির আয়তন কমাতে হবে। সব মিলিয়ে প্রায় ২০-২৫ জন নেতাকে বাদ দিয়ে ৭০ জনের জেলা কমিটি করতে হবে বলে আলিমুদ্দিনের নির্দেশ। কিন্তু কোনও নেতাই তাতে রাজি না-হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে বুধবার রাতে সম্মেলন শেষে কলকাতা জেলা নেতৃত্ব ফের আলোচনায় বসেন। আজ, বৃহস্পতিবার সম্মেলন শেষ হবে। তার আগেই ওই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে অনেক প্রতিনিধি জেলা কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে সরব হন। মঙ্গলবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মূলত নিচুতলার নেতা-কর্মীদের ‘সতর্ক’ করেছিলেন। এ দিন প্রতিনিধিরা অভিযোগের আঙুল তোলেন জেলা কমিটির নেতাদের দিকে। তাঁরা বলেন, কোনও ব্যাপারে কমিশন গঠনের পরে মাসের পর মাস কেটে যায়। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। আবার অনেক সময়ে লোকাল বা জোনাল কমিটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা কমিটির কাছে সুপারিশ করার পরেও বিষয়টি মাসের পর মাস ফেলে রাখা হয়। শাস্তির সুপারিশ কার্যকর না করতে অভিযুক্ত নেতা নানা ভাবে জেলা কমিটির উপরে প্রভাব খাটান এমন অভিযোগও ওঠে।
এই সূত্র ধরেই প্রতিনিধিরা বলেন, দলকে ‘শুদ্ধ’ করতে হলে কেবল নিচু তলার দিকে দেখলে হবে না। উপর তলার নেতাদেরও নিজেদের ‘শুদ্ধ’ করতে হবে। উপর তলার কিছু নেতার জীবনযাত্রা নিয়ে যে নিচু তলার নেতাদের একাংশের প্রশ্ন আছে, তা-ও উঠে আসে সম্মেলনে। একাধিক প্রতিনিধি বলেন, দীর্ঘদিন জেলা কমিটির সদস্য থাকা সত্ত্বেও অনেকে পার্টির কাজে পূর্ণ সময় দেন না। তাঁদের প্রশ্ন, এই নেতাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
লোকসভা, পুরসভা এবং বিধানসভার ভোটে পরাজয় নিয়েও বিস্তার কাটাছেঁড়া করেন প্রতিনিধিরা। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, দল যে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছিল, জেলার অভিজ্ঞ নেতারা তা আগাম বুঝতে ব্যর্থ হলেন কেন? একাধিক প্রতিনিধি বলেন, আগামী দিনে সরকার গঠন না পার্টি গঠন কোন বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত, সে ব্যাপারে নেতৃত্বকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। |