শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিজ্ঞপ্তি সংবলিত নোটিস বোর্ড উপড়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগে বেতনের ঠিক আগের দিন বাগানে লক-আউট ঘোষণা করলেন কর্তৃপক্ষ। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটে কালচিনি ব্লকের দলসিংপাড়া চা বাগানে। প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বিষয়টি শুনে উদ্বেগ প্রকাশ করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “দলসিংপাড়া চা বাগান লকআউটের খবর পেয়েছি। বিষয়টি শ্রমমন্ত্রীকে জানাব। কী কারণে বাগান বন্ধ হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখব।” মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “এই সময় চা গাছে ভাল পাতা হয় না। সে জন্য বাগান কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতে বাগান ছেড়ে চলে যান। |
ওই কারণেই দলসিংপাড়া চা বাগান কর্তৃপক্ষ লকআউট করেছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” দলসিংপাড়া চা বাগানের জেনারেল ম্যানেজার রুপেন্দর সিংহ রানাওয়াত দাবি করেন, রুগ্ণ চা বাগানটি তারা দাঁড় করানোর চেষ্টা করছিলেন। চা গাছ লাগানো, পুরোনো বকেয়া ধীরে ধীরে মেটানো হচ্ছিল। অভিযোগ, “কিছু শ্রমিক, বহিরাগত মাঝে মাঝে ম্যানেজারদের ভয় দেখাচ্ছিল। এ অবস্থায় কেউ বাগানে কাজ করতে চাইছেন না।” চা শ্রমিক সংগঠন এনইউপিডব্লু রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রভাত মুখোপাধ্যায় বলেন, “দলসিংপাড়া চা বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিক অসন্তোষের যে কারণ দেখিয়ে বাগান ছেড়েছে তার যুক্তি নেই। বিষয়টি মহকুমাশাসক ও শ্রম দফতরের আধিকারিকদের জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।” চা বাগানের শ্রমিক দিবস লামার অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ বাগান ছাড়ার জন্য আগে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারটি ক্রেন দিয়ে খুলে নেয়। বাগানের আবাসনের কোয়ার্টারে জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ। মঙ্গলবার রাত দশটা নাগাদ সহকারী ম্যানেজাররা বাগান ছেড়ে চলে যান। কালচিনির তৃণমূল নেতা পবন লাকড়া জানান বলেন, “বিষয়টি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য শ্রমমন্ত্রীকে জানাব।” বর্তমানে বাগানে ১৬৪৩ জন শ্রমিক রয়েছেন। বাগানের বিকাশ পরিষদ ইউনিট সম্পাদক মারিয়ানুস কুল্লু জানান, কর্তৃপক্ষ ১৫০৩ জনের উপর শ্রমিক রাখবেন না বলে জানান। কিছু শ্রমিককে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হয়। ক্ষুব্ধ হয়ে এক শ্রমিক নোটিস বোর্ড দেওয়াল থেকে তুলে মাটিতে ফেলে দেন। তিনি বলেন, “এই কারণ দেখিয়ে বাগান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটা মানা হবে না।” |