|
|
|
|
পিএফ-ইএসআই নিয়ে চাপানউতোর |
ঠিকা শ্রমিকদের কাজে না আসার নির্দেশ, ক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
প্রভিডেন্ড ফান্ড এবং ইএসআই চালু না থাকায় ১৬৫ জন ঠিকা শ্রমিককে কাজে না আসার মৌখিক নির্দেশ দিয়েছে একটি বেসরকারি কারখানা। নতুন বছরের প্রথম দিনে দুর্গাপুরের ওই কারখানার এমন নির্দেশ নিয়ে ক্ষুব্ধ ঠিকা শ্রমিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, কারখানা কর্তৃপক্ষ সে ভাবে উদ্যোগী না হওয়াতেই তাঁদের ইএসআই এবং পিএফ চালু হয়নি। অন্য দিকে, কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, ঠিকা শ্রমিকদের তরফে উদ্যোগের অভাব থাকাতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকের ওই বেসরকারি ইস্পাত কারখানায় কাজ করে ঠিকা শ্রমিকেরা দৈনিক দেড়শো টাকা হারে মজুরি পান। রবিবার থেকে কাজ চলে যাওয়ায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন বলে জানান ওই ঠিকা শ্রমিকেরা। তপন দত্ত নামে এমনই এক শ্রমিক বলেন, “পাঁচ বছর ধরে কাজ করছি। হঠাৎ কাজ চলে যাওয়ায় রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিবারে দুশ্চিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে।”
আর এক শ্রমিক সঞ্জয় হাঁসদা জানান, তিনি আট বছর ধরে কাজ করছেন। তিনি বলেন, “কারখানা কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে হঠাৎ করে বিপাকে পড়ে গিয়েছি।” তাঁদের দাবি, ইএসআই এবং পিএফ চালু করতে কারখানা কর্তৃপক্ষ তেমন উদ্যোগী না হওয়াতেই এখন এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। অবিলম্বে কাজ ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
দুর্গাপুরের আঞ্চলিক পিএফ কমিশনারের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরতদের অবসরকালে সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা চালায় ‘এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন’। সাধারণত নিয়োগাকারী সংস্থাই কর্মীদের পিএফের বিষয়টি নথিবদ্ধ করে থাকে। কিন্তু বহু শিল্প সংস্থা এই নিয়ম মানে না বলে অভিযোগ। বছরখানেক আগে অভিযান চালিয়ে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানায় এই নিয়ম না মানার বিষয়টি ধরাও পড়েছিল।
বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছিল, ওই কর্মীদের অনেকেই হয় নতুন কাজে যোগ দিয়েছেন, অথবা শিক্ষানবিশি পর্যায়ে রয়েছেন। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অবশ্য কারখানা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের অভাবের কথাই বলেছিলেন। রবিবারও একই অভিযোগ তুলেছেন রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকের ওই বেসরকারি ইস্পাত কারখানায় কাজ হারানো শ্রমিকেরা।
কারখানা কর্তৃপক্ষ অবশ্য ঠিকা শ্রমিকদের অভিযোগ মানতে চাননি। এক আধিকারিক বলেন, “কারখানার সমস্ত কর্মীই যাতে ইএসআই এবং পিএফের সুবিধা পান, তা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের তরফে ধারাবাহিক উদ্যোগের পরেও অনেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেন না। অনেক সময় যে ঠিকাদারের অধীনে শ্রমিকেরা কাজ করেন, তাঁর দিক থেকেও তৎপরতায় খামতি থাকে।” ওই ঠিকা শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের তরফে কিছু করণীয় থাকলে তা করা হবে বলে তাঁর আশ্বাস।
এ দিকে, আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শ্রমিকেরা যেমন কারখানার স্বার্থ দেখবেন, তেমনই কর্তৃপক্ষেরও শ্রমিকদের স্বার্থ দেখা উচিত। দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|