যার বিধানসভা এলাকায় অনুষ্ঠান হচ্ছে কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের সেই ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক অক্ষয় ঠাকুরের নাম আমন্ত্রণ পত্রে রাখা হয়নি। এমনকী বিধায়ক হিসাবেও তাঁকে আমন্ত্রন জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। আমন্ত্রণপত্রে নাম নেই খোদ কোচবিহার জেলা পরিষদের সিপিএম সভাধিপতি দিলীপ বিশ্বাসেরও। জেলার বাম বিধায়কদের অন্যরাও সকলে আমন্ত্রণপত্রে লেখা নামের তালিকায় উপেক্ষিত। আর এমনই সব কারণে দলতন্ত্রের বিতর্ক নিয়ে সোমবার কোচবিহার জেলা বইমেলা শুরু হল। ওই ঘটনায় কোচবিহারের রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি বই প্রেমীদের মধ্যেও সোরগোল পড়েছে। সোমবার দুপুরে কোচবিহার রাসমেলা ময়দানে সপ্তাহব্যাপী জেলা বইমেলা শুরু হয়েছে। সাহিত্যিক রবিশঙ্কর বল ওই বইমেলার উদ্বোধন করেন। মঞ্চে অতিথিদের মধ্যে লেখক সবুজবরণ রায়, বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন, নাটাবাড়ির বিধায়ক তথা এনবিএসটিসি’র চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, কোচবিহারের ভাইস চেয়ারম্যান আমিনা আহমেদ, তৃণমূল নেতা আবদুল জলিল আহমেদ ছাড়াও কয়েকজন প্রশাসনিক কর্তা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে অবশ্য মাথাভাঙার তৃণমূল বিধায়ক বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারপার্সন কল্যাণী পোদ্দারের নামও ছিল। কোচবিহার জেলা ফরওয়ার্ড ব্লক সম্পাদক তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “যেখানে অনুষ্ঠান হচ্ছে সেখানকার বিধায়কের নাম অন্তত আমন্ত্রণপত্রে রাখা উচিত ছিল। সব দেখেশুনে মনে হচ্ছে জেলায় মাননীয় বিধায়ক দু’জনই আছেন। |
বামপন্থী বিধায়করা কেউ মাননীয় হতে পারেননি বলেই হয়তো তাঁদের কারও নাম তাতে জায়গা পায়নি।” কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক অক্ষয় ঠাকুর জানান, এলাকার বিধায়ক হিসাবে একটা আমন্ত্রণপত্রও পাননি তিনি। সে জন্য এদিনের অনুষ্ঠানকে বয়কট করেছেন। তিনি বলেন, “বইমেলাকে দলতন্ত্রের অনুষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি দিলীপ বিশ্বাস জানান, বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরাবর জেলা পরিষদ থেকে টিফিন সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন, “গত বছর মিছিলে হেঁটেছিলাম। এবার কিছু জানানোই হল না। সভাধিপতি গেলে বইমেলার গৌরব কমে যেত কি না বুঝতে পারছি না।’’ এমন অভিযোগে বিব্রত জেলা বইমেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক তথা তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার-১ ব্লক সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন, “লোকাল লাইব্রেরি অথরিটির সদস্য বলেই নাটাবাড়ি ও মাথাভাঙ্গার বিধায়কের নাম আমন্ত্রণপত্রে রাখা হয়। তা ছাড়া ওই কমিটির বৈঠক করেই অতিথি তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। এটা কারও একক সিদ্ধান্তে হয়নি। তবে সকলকে আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে। দলতন্ত্রের ব্যাপার নেই।” তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আবদুল জলিল আহমেদ অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করেছেন, “যাঁরা এখন দলতন্ত্রের কথা বলছেন গত ৩৪ বছর তাঁরা কী করেছেন সেটা ভেবে দেখুন। দিনহাটায় আমাদের বিধায়ক বাম আমলে কটা সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন?” |