বিভাগীয় পরীক্ষায় পাস করে পদোন্নতি পাওয়া কর্মীদের নয়া পদে যোগ দেওয়ার জন্য ‘রিলিজ’ করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের সদর দফতর। কিন্তু, ওই কর্মীদের বদলে পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী পাঠানোর কোনও নির্দেশ জারি হয়নি। তাতেই সমস্যায় পড়েছেন কোচবিহার জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষ। কারণ কাউকে ছেড়ে দিতে হলে শূন্যপদ পূরণের জন্য লোক দরকার। না হলে থানা চালানো কঠিন হয়ে পড়বে বলে অফিসারদের অনেকেই জানিয়েছেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেছেন, “বিষয়টি পুরোপুরি বিভাগীয়। পুলিশ-প্রশাসনের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সব দিক মাথায় রেখে ওই ব্যাপারে এগোব। তার বাইরে কিছু বলতে চাই না।” এই ব্যাপারে সরব বিভিন্ন পুলিশ কর্মী সংগঠনের নেতারাও। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক বিজিতাশ্ব রাউথ বলেন, “পুলিশ ডাইরেক্টরেটের নির্দেশে সকলকে গত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন পদে যোগ দিতে বলা হয়েছিল। অথচ কোচবিহারে পদোন্নতি পাওয়া কর্মীদের বড় সংখ্যকই সেই সময়সীমার মধ্যে রিলিজ অর্ডার পাননি বলে অভিযোগ পেয়েছি। এর ফলে ওই কর্মীরা সিনিয়রিটি, ইনক্রিমেন্টের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কেন এমন হল তা রাজ্য পুলিশের ডিজি, এডিজির নজরে আনব।” নন গেজেটেড পুলিশ কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে ওই কর্মীদের ছেড়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। সংগঠনের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অরুণ দে বলেন, “জেলায় পুলিশ কর্মীদের আউটগোয়িং ও ইনকামিং সংখ্যার ফারাকের জন্য সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছি। ফলে অনেকেরই কয়েক মাসের ডিএ র টাকা ক্ষতি হবে। ওই সমস্যা এড়াতে আমরা জেলা পুলিশ সুপারকে ব্যাবস্থা নিতে আর্জি জানিয়েছি।” জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের বিভাগীয় পদোন্নতির পরীক্ষায় কোচবিহার জেলার ১২৭ জন পাশ করেন। তাদের মধ্যে ৯৩ জন কনস্টেবল থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর (এএসআই) ও ৩৪ জন এএসআই থেকে সাব ইন্সপেক্টর পদে উন্নীত হন। তাঁদের মধ্যে ২৩ জনকে ৩১ ডিসেম্বরে নতুন পদে যোগ দেওয়ার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাকি ১০৪ জন রিলিজ অর্ডার এখনও পাননি। কবে ওই অনুমতি পাবেন তা নিয়েই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকরিক বলেন, “জেলার বিভিন্ন থানায় কর্মরত যত সংখ্যক কর্মী প্রমোশন পেয়েছেন তাঁদের সিংহভাগকে বাইরের জেলায় নতুন দায়িত্বে পাঠানোর নির্দেশ এসেছে। অল্প কিছু কর্মীকে তার বদলে বাইরের জেলা থেকে এখানে পাঠানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সকলকে রিলিজ করা হলে জেলার কয়েকটি থানা চালানোই মুশকিল হয়ে পড়বে। ওই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ছাড়া যাচ্ছে না।” এমন অবস্থায় প্রমোশন পাওয়া পুলিশ কর্মীরাও উদ্বিগ্ন। একটি কর্মী সংগঠনের কয়েকজন সদস্যের বক্তব্য, “১ জুলাই সরকারি কর্মীদের ডিএ ঘোষণার ৬ মাসের মধ্যে প্রমোশন নিয়ে নতুন পদে যোগ দিলে ইনক্রিমেন্ট, গ্রেড পে পাওয়া নিয়ে সমস্যা হয় না। কিন্তু ৬ মাস পার হলেই ইনক্রিমেন্ট পরের জুলাই পর্যন্ত পাওয়া যাবে না। বিকল্প কর্মী না-পাওয়ার কারণে আমাদের কেন আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে, বুঝলাম না।” |