চিকিৎসক দেরিতে আসায় দুর্ঘটনায় জখম এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে সোমবার সকালে ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হল। মারধর করা হয় চিকিৎসককে। তিনি ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘণ্টা তিনেক অবরোধ করেন হাসপাতালের সামনের রাস্তা।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রামনগরের পাটদহ-শিমুলতলা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গির শেখ (৩০) রবিবার গভীর রাতে ওই এলাকায় জিয়ঞ্চের মোড়ে লরি থেকে বালি নামানোর কাজ করছিলেন। সেই সময়ে সরিষাগামী একটি গাড়ি জাহাঙ্গিরকে ধাক্কা মেরে পালায়। কোমরে ও বুকে গুরুতর আঘাত পান ওই যুবক। ভোর ৩টে নাগাদ পরিবারের লোকজন তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করান। কিছু ক্ষণের মধ্য্যেই তিনি মারা যান।
এর পরেই জাহাঙ্গিরের পরিবারের লোকজন ওই অভিযোগ তোলেন। হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে তাঁরা জরুরি বিভাগের সামনে থাকা যাবতীয় আসবাবপত্র এবং জানলার কাচ ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ। সামনে থাকা চিকিৎসক অঞ্জনবাবুকেও মারধর করা হয়। অঞ্জনবাবুর বুকে এবং ডান চোখে আঘাত লাগে। তবে, সেই আঘাত গুরুতর নয় বলে হাসপাতাল সুত্রে জানানো হয়েছে। |
প্রহৃত চিকিৎসক। ছবি: দিলীপ নস্কর |
মৃতের ভাই শাহেনশা শেখ বলেন, “হাসপাতাল থেকে খবর দেওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পরে অঞ্জনবাবু ভাইকে দেখতে আসেন। তত ক্ষণে ভাই মারা যায়। চিকিৎসক সময়মতো এলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটত না।” তবে, এ নিয়ে তাঁরা কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি।
অভিযোগ অস্বীকার করে অঞ্জনবাবু বলেন, “আমাকে ভোর সওয়া ৩টে নাগাদ ডাকা হয়। আমি ৩টে ৪০ মিনিটের মধ্যেই হাসপাতালে পৌঁছই। ওই যুবকের অবস্থা ভাল ছিল না বলে শুনেছি। গিয়ে দেখি তিনি মারা গিয়েছেন। মিথ্যা অভিযোগ আমাকে মারধর করা হয়েছে।” তিনি এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনার কথা শুনে এ দিন হাসপাতালে আসেন মহকুমাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য এবং ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার। মহকুমাশাসকই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি। তিনি বলেন, “এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তার জন্য হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ ক্যাম্প বসানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।” হাসপাতালের সুপার চিরঞ্জীব মুর্মু জানান, এই ঘটনায় সমস্ত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা আতঙ্কিত। গোটা বিষয়টি তদন্ত করা হবে।”
|