মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যখন পুলিশ চোলাই মদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে, তখন দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধেই তাতে বাগড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠল। শনিবার ডুয়ার্সের কালচিনিতে বেআইনি মদের ব্যবসায় ধৃতদের পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। অভিযোগ, সেই সময় উপস্থিত ছিলেন দুই স্থানীয় তৃণমূল নেতা। পুলিশের আটক করা চোলাই মদও ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
শনিবার রাতে কালচিনি থানার চুয়াপাড়া চা বাগান এলাকার দু’টি বাড়িতে চোলাই মদের আসর বসেছে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। দুই জ্যারিকেন ভর্তি চোলাই মদ এবং ৬ জনকে আটকও করে পুলিশ। তার পরেই ওই দুই তৃণমূল নেতার উপস্থিতিতে পুলিশের গাড়ি ঘিরে আটকদের নামিয়ে নেওয়া হয়। পুলিশ কর্মীদের শারীরিক ভাবে হেনস্থাও করা হয় বলে অভিযোগ। সাবির লোহার ও বিক্রম বিশ্বকর্মা নামে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে এই ব্যাপারে পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেছে।
আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনুপ জয়সোয়াল বলেন, “অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বিক্রম বিশ্বকর্মার বক্তব্য, “পুলিশ মদের আসর থেকে ছাত্রদের ধরায় এলাকার জনতা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের উপক্রম হয়। আমরা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিই। এখন আমাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে শুনছি। আমরা নির্দোষ।”
পুলিশ জানায়, চোলাই মদ-সহ ৬ জনকে আটক করার ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় যান ওই দুই তৃণমূল নেতা। পুলিশের অভিযোগ, দুই নেতা নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে পুলিশকে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান। পুলিশ কর্মীরা তৃণমূল নেতাদের দাবি মানতে অস্বীকার করলে ওই দু’জন জনতাকে উস্কে দেন বলে অভিযোগ। উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ির সামনে বড় বড় পাথর রেখে পথ আটকায়। এর পরে ছয় অভিযুক্তকেই ভ্যান থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়। কেড়ে নেওয়া হয় আটক করা মদের জ্যারিকেন দু’টিও।
সোমবার কালচিনি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক রণজিৎ ঘোষ বলেন, “পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া বরদাস্ত করা হবে না বলে আমাদের নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ রয়েছে। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে দলীয় ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” কালচিনি ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পবন লাকড়া অবশ্য অভিযুক্তদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তাঁর দাবি, ঘটনাস্থলে পুলিশ বিনা দোষে ছাত্রদের ধরেছিল বলে জানতে পেরেছি। আমাদের স্থানীয় নেতৃত্ব পরিস্থিতি সামাল দেন। |