যাত্রী দুর্ভোগ লাঘবের দাবিতে জলপাইগুড়িতে ৩১ ডি জাতীয় সড়কে চলছে একের পর এক অবরোধ। আর এই অবরোধই সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। একে বেহাল তিস্তা সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে গত ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নাকাল হতে হয়েছে যাত্রীদের। রবিবার নতুন বর্ষের প্রথম দিনে সামান্য স্বস্তি মিললেও সোমবার সকাল থেকে ফের যানজটে দেরবার দশা হয়েছে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে। সোমবারেও তিস্তা সেতুর দু’পাড়ে বাস-ট্রাকের লম্বা লাইন পড়ে যায়। কয়েক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকায় পরে নিরুপায় যাত্রীদের অনেকে ছিপছিপে বৃষ্টিতে ভিজে রওনা দেন সেতুর ওপাড়ে। ছোট বাস ও ট্রাক গজলডোবা হয়ে চলাচল করেছে। যদিও আবহাওয়া খারাপ থাকায় রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম থাকায় সেমবার যানজটের জন্য জাতীয় সড়ক সংলগ্ন জনপদগুলির তেমন সমস্যা হয়নি। এদিনও ময়নাগুড়ি-শিলিগুড়ি রুটের বেশিরভাগ বাস রাস্তায় নামেনি। গন্তব্যে পৌছতে যাত্রীরা রেল স্টেশনে ভিড় করেছেন। ময়নাগুড়ির বিডিও সম্রাট চক্রবর্তী বলেন, “ছোট বাসগুলিকে গজলডোবার রাস্তায় ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু গজলডোবার পরে ওই রাস্তার পরিস্থিতি ভাল নয়। তার উপরে বৃষ্টি থাকায় সোমবার বেশি বাস চলেনি। কিন্তু এ দিন ট্রেন পরিষেবা ঠিক থাকায় যাতায়াতে খুব একটা সমস্যা হয়নি।” সম্প্রতি জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া ৩১ ডি জাতীয় সড়কের ওপরে এই তিস্তা সেতুতে মেরামতির কাজ শুরু হওয়ায় দিনরাত যানজট লেগে রয়েছে। সেতুর দু’দিকের সড়কে। |
কখনও জাতীয় সড়কে ৪০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকা জুড়ে যানজটে থমকে থাকছে ছোট বড় সব ধরনের গাড়ি। তার ওপরে দ্রুত সেতু মেরামতির দাবিতেই ঘন ঘন সেতু লাগোয়া জাতীয় সড়ক অবরোধে যানজট তীব্র আকার ধারণ করছে। গত ২৬ ডিসেম্বর তিস্তা সেতুর দ্রুত মেরামতির দাবিতে সেতু লাগোয়া জাতীয় সড়কে এক ঘন্টা অবরোধ করে যুব কংগ্রেস। তার পরে গত ৩০ ডিসেম্বর অনান্য দাবি-দাওয়ার পাশাপাশি তিস্তা সেতু দ্রুত মেরামতির দাবিতে ফের জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বামপন্থী কৃষক সংগঠনগুলি। দু’দিনই অবরোধের চাপে সেতুতে মেরামতির কাজ পর্যন্ত থমকে যায়। এদিন, সোমবার সেতু সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে সেতুর মুখেই একঘন্টা অবরোধ করে আরএসপির ছাত্র-যুব সংগঠন। এ দাবিতে মঙ্গলবার ফের দেড় ঘন্টার জেলা জাতীয় সড়ক অবরোধের কর্মসূচি নিয়েছে যুব কংগ্রেস। যুব কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে, সেতু লাগোয়া পাহাড়পুর মোড়ে অবরোধ করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার জেলা জুড়ে একই কর্মসূচি নিয়েছে ডিওয়াইএফ। তিস্তা সেতু সংলগ্ন পাহাড়পুর মোড় ও দোমহনী মোড়েও অবরোধ হবে বলে জানানো হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “রাজনৈতিক অবরোধ নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু যারা অবরোধে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁদের বোঝার ক্ষমতা নেই যে অবরোধের ফল ভুগতে হচ্ছে যাত্রীদের। অবরোধের ফলে সেতুতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়ে মেরামতির কাজ বন্ধ হচ্ছে। তাতে কার লাভ হচ্ছে?” |