নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কৃষকদের সঙ্কট দূর করতে রাজ্য সরকার কোনও ‘কার্যকর’ পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ করল সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সোমবার ওই অভিযোগ করেছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, “ফসলের দাম না পেয়ে রাজ্যে একের পর এক কৃষক আত্মহত্যা করছেন। কিন্তু রাজ্য সরকার উদাসীন।”
কৃষকরা ফসলের ন্যায্য দাম না-পাওয়ার প্রতিবাদে আগামী বুধবার গ্রামবাংলা বন্ধের ডাক দিয়েছে চারটি বামপন্থী কৃষক সংগঠন। তার আগে বুদ্ধ-বিমানের এই সমালোচনা নিঃসন্দেহে বামপন্থী কৃষক সংগঠনগুলিকে বাড়তি ‘মনোবল’ যোগাবে। ফসলের ন্যায্য দামের দাবিতে বুধবারই ধর্মতলায় বিক্ষোভে-জমায়েতের ডাক দিয়েছে তৃণমূলের জোটসঙ্গী তথা সরকারের শরিক কংগ্রেসও। বিধানসভা নির্বাচন-পূর্ব সময়ে তৃণমূলের সঙ্গী এসইউসি অবশ্য মনে করে, কেন্দ্রে কংগ্রেস এবং রাজ্যে বাম জমানায় অনুসৃত নীতির ফলেই কৃষকদের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে এসইউসি বুধবার কংগ্রেস ও বামপন্থীদের ডাকা আন্দোলনে সাড়া না-দেওয়ার জন্য কৃষকদের কাছে আবেদন জানিয়েছে। এ দিন দলীয় মুখপত্রের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে বিমানবাবু বলেন, “বামফ্রন্টের আমলে গ্রামে যে উন্নয়নের ধারা গড়ে উঠেছিল, তা আক্রমণের মুখে। কৃষকরা পাটের দাম পায়নি। এ বার ধানের দামও পাচ্ছে না। ধান-পাট-আলুর দাম না পেয়ে একের পর এক কৃষক আত্মহত্যা করছে। সরকার মুখে কিছু কথা বললেও কাজের কাজ কিছুই করছে না।” একই সুরে বুদ্ধবাবুও বলেন, “আমাদের নীতি ছিল, গরিবের হাতে জমি থাকবে। তারা ফসলের ন্যায্য দাম পাবে। কিন্তু এই সরকারের আমলে সেই নীতি ভেঙে পড়েছে।” প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, “ধানের দাম যা পড়েছে, গত ১০ বছরে তা হয়নি। কৃষকরা ধান নিয়ে চালকলের পিছনে দৌড়চ্ছে। এমন ঘটনা আগে কখনও হয়নি!”
১০০ দিনের কাজের প্রকল্প (রেগা) নিয়েও বুদ্ধবাবু রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান। এই কাজের সঙ্গেও মূলত গ্রামের কৃষক এবং ভূমিহীন খেতমজুররা যুক্ত। সাত মাসের তৃণমূল জোট সরকার নিয়ে সমালোচনা করলে পাল্টা ৩৪ বছরের কথা উঠছে, তা স্বীকার করেও বুদ্ধবাবু বলেন, “রেগার কাজ কী হচ্ছে, যারা সরকারে আছেন, তাঁরাই জানেন!” বিমানবাবু বলেন, “ভূমিহীন কৃষকদের যে জমি দেওয়া হয়েছিল, গ্রামে গ্রামে জমিদার গোষ্ঠী আবার তা কেড়ে নিতে তৎপর হয়েছে। পাট্টা ফেরত নিতে চাইছে।” বিমানবাবুর অভিযোগ, রাজ্য সরকার ‘নীতিহীন নীতি’ নিয়ে চলছে বলেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। |