দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের
জয়পুরের গ্রামে খুন তৃণমূল কর্মী
বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বাঁকুড়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। বিশেষ করে বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর, জয়পুর ব্লকের বিভিন্ন এলাকা গত কয়েক মাসে একাধিকবার তৃণমূলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষে তেতে উঠেছে। দলীয় সেই দ্বন্দ্বের চেহারাটাই ফের সামনে এসেছে রবিবার সন্ধ্যায় জয়পুর থানার হরিণাশুলি গ্রামের খুনের ঘটনায়।
ওই গ্রামে ইন্দিরা আবাস যোজনার বাড়ির টাকা বিলিকে ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন হয়েছেন গোলাম শেখ (৩৫) নামে এক দলীয় কর্মী। খুনের ঘটনায় জয়পুর ব্লক তৃণমূলের দুই নেতা রবিউল মিদ্যা ও ইয়ামিন শেখ-সহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন নিহতের দাদা। পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতেরা এলাকায় সক্রিয় ভাবে তৃণমূল করেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
খুনের ঘটনার জন্য তৃণমূলের জয়পুর ব্লক কার্যকরী সভাপতি দিলীপ খাঁ প্রকাশ্যেই রবিউল গোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন। তাঁর অভিযোগ, “রবিউল মিদ্যা আর ইয়ামিন শেখ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ওদের অনুগামীদের দিয়ে এই হামলা করিয়েছে। আমরা অনুগামীদের পাশাপাশি ওই দু’জনেরও শাস্তি দাবি করছি।” যদিও এই ঘটনায় তাঁরা কোনও ভাবেই যুক্ত নন বলে দাবি করেছেন ব্লক তৃণমূলের সম্পাদক রবিউল। তাঁর বক্তব্য, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাদের নাম জড়ানোর চেষ্টা চলছে।”
নিহত তৃণমূল কর্মী বিবাহিত। এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে তাঁর। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে নিহতের দাদা ইউসুফ শেখ বলেন, “ইন্দিরা আবাস যোজনা নিয়ে রবিউল, ইয়ামিন ও তাদের দলবল দীর্ঘদিন ধরেই দুর্নীতি করছে। রবিবার সন্ধ্যায় ওই যোজনার টাকা পেতে এক মহিলাকে দিয়ে সই-সাবুদ করতে ওরা গ্রামে এসেছিল। আমার ভাই প্রতিবাদ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়। ওকে বেধড়ক মারধরের পরে কুড়ুল, টাঙ্গি দিয়ে কোপানো হয়।” আশঙ্কাজনক অবস্থায় গোলাম শেখকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রবিবার রাত ১২টা নাগাদ সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) দিব্যজ্যোতি দাস জানিয়েছেন, নিহত গোলামের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ ছিল। কে বা কারা তাঁকে মারল, তার তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের দাবি, মাস সাতেক আগে গোলাম জেল থেকে বেরোনোর পরে তাঁকে তৃণমূলের মিটিং-মিছিলে দেখা দিত। ময়নাতদন্তের পরে নিহতের মৃতদেহ গ্রামে নিয়ে গিয়ে মিছিল হবে বলে জানিয়েছেন দিলীপ খা।
এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চাপানউতোর শুরু হলেও জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী ঘটনার দায় সিপিএমের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। গোলামকে তাঁর অভিযোগ, “সুপরিকল্পিত ভাবে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই খুন করেছে। এটা আমাদের দলের অন্তর্কলহের ব্যাপার নয়।” যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিপিএমের জয়পুর জোনাল কমিটির সম্পাদক বিশ্বনাথ দে বলেন, “একেবারে হাস্যকর কথা। ওরা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি করছে। আর তৃণমূলের নেতারা আমাদের দলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.