এক মাছ ব্যবসায়ীর বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মাকে মারধর করে চম্পট দিল কয়েক জন দুষ্কৃতী। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে বসিরহাটের মাটিয়ার পণ্ডিতজি কলোনিতে। রণজিৎ স্বর্ণকার নামে ওই মাছ ব্যবসায়ী দুষ্কৃতীদের দেখে প্রাণের ভয়ে পালান। তাঁর অনুমান, তাঁকে খুন করে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। কেননা, কয়েক দিন আগে তাঁর অফিস ও স্থানীয় কয়েকটি দোকানে চুরি হয়। তিনি পরে কয়েক জন দুষ্কৃতীকে ধরে চড়-থাপ্পড় মারেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে রণজিৎবাবুর বাড়িতে হামলা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগে মাটিয়ার একটি পুলিশ চৌকি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পর থেকে ওই এলাকায় দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব বেড়েছে। দিন কয়েক আগে কয়েকটি দোকান-সহ রণজিৎবাবুর অফিসে চুরি হয়। রণজিৎবাবু এ নিয়ে থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। রবিবার রাত ১টা নাগাদ ২৫-৩০ জন দুষ্কৃতী কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে, হাতে রড-তলোয়ার নিয়ে রণজিতবাবুর বাড়িতে হামলা চালায়। পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে রণজিৎবাবু জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা প্রথমে বাড়ির ঠাকুরঘরের দরজা ভেঙে ঢোকে। শব্দে বাড়ির সকলের ঘুম ভেঙে যায়। এই সময়ই কয়েক জন দুষ্কৃতী রণজিৎবাবু ও তাঁর ভাই ভোলানাথবাবু যে ঘরে থাকেন তার দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। পিছনের দরজা দিয়ে রণজিৎবাবুরা বেরিয়ে যান। এর পরেই দুষ্কৃতীরা রণজিৎবাবুর বৃদ্ধ বাবা-মাকে মারধর করে পালায়।
ভোলানাথবাবু বলেন, “বড় কিছু হতে পারে মনে করে মা আমাদের পিছনের দরজা খুলে বার করে দেন। সেই সময়ে দোতলার ঘর থেকে ভাইপো প্রতিবেশীদের মোবাইলে বিপদের কথা জানিয়ে দেয়। প্রতিবেশীরা আসার আগে ওরা বাবা-মা কে মারে। আমাদের খোঁজ করে। প্রতিবেশীরা আসায় ওরা পালায়।” রণজিৎবাবু বলেন, “চুরির অভিযোগে দিন কয়েক আগে পাড়ার যুবকেরা কয়েক জনকে ধরে। আমি তাদের চড়-থাপ্পড় মারি। মনে হয় সেই রাগেই দুষ্কৃতীরা আমাকে খুন করতে আসে।”
সোমবার সকালে পুলিশ ওই বাড়িতে তদন্তে যায়। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে এসডিপিও (বসিরহাট) আনন্দ সরকারের দফতরে যান বসিরহাটের সাংসদ নুরুল ইসলাম এবং বসিরহাট উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক এটিএম আবদুল্লা। তাঁরা মাটিয়া এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানো এবং পুলিশ চৌকি ফের চালু করার দাবি জানান।
এসডিপিও বলেন, “পুলিশ চৌকির ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলার বিষয়টি মনে হচ্ছে পুরনো কোনও শত্রুতার জের। তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |