উত্তরপাড়া রাজা প্যারীমোহন কলেজে মনোনয়নপত্র তুলতেই পারল না এসএফআই। তৃণমূলের ‘ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর হামলা’র জেরে তারা কলেজের কাছে ঘেঁসতেই পারেনি বলে অভিযোগ তুলেছে এসএফআই। সেই সঙ্গে ‘পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা’রও অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এত দিন যে সব অভিযোগ শোনা যেত, এসএফআইয়ের বিরোধী ছাত্র সংগঠনের মুখে, বিধানসভা ভোটের পর থেকে একই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে হুগলির বিভিন্ন কলেজে। তৃণমূল বা তাদের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি এ দিনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ দিকে, বামেরা মনোনয়ন জমা না দেওয়ায় দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক পরে ওই কলেজে ছাত্র সংসদের ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে বাম-বিরোধীরা।
কলেজ সূত্রের খবর, আগামী ৬ জানুয়ারি এই কলেজে ছাত্রসংসদের ৩০টি আসনে ভোটগ্রহণের কথা। সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র তোলার দিন। জমা দেওয়ার দিন মঙ্গলবার। মনোনয়নপত্র তোলাকে কেন্দ্র করে এ দিন উত্তেজনা ছিল। কলেজ চত্বর ছাড়াও রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে পুলিশি নজরদারি রাখা হয়। তৃণমূলের লোকজন সকাল থেকেই কলেজ চত্বরের ‘দখল’ নিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সকাল ১১টা নাগাদ কলেজ থেকে কিছুটা দূরে জিটি রোডের ধারে দু’পক্ষের মারামারি বাধে। দু’পক্ষেরই একজন করে চোট পান। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। |
এসএফআইয়ের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই ‘বহিরাগত’ তৃণমূল সমর্থকেরা একতরফা হামলা চালায়। সিপিএমের নেতা-কর্মীরাও মারের হাত থেকে রেহাই পাননি।
দুপুরে কলেজের সামনে পৌঁছে দেখা গেল, কলেজ পড়ুয়া টিএমসিপি কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি তৃণমূলের প্রচুর নেতা-কর্মী উপস্থিত। এসএফআইয়ের কাউকে ধারেকাছে দেখা যায়নি। কলেজ থেকে বেশ কিছুটা দূরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে তাঁরা জড়ো হয়েছিল। এসএফআই পরিচালিত বিগত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক শান্তনু চক্রবর্তীর অভিযোগ, “নীতি, আদর্শের লড়াইতে পারবে না বুঝেই গায়ের জোরে মনোনয়নপত্র তুলতেই দিল না তৃণমূল। ওদের কাউন্সিলরেরা বহিরাগতদের এনে হামলা করল। পুলিশ সবটা দাঁড়িয়ে দেখল।” সিপিএম করায় হওয়ায় কয়েক জন কলেজের কর্মীকেও ‘অনৈতিক ভাবে’ কলেজ কর্তৃপক্ষ ‘বের করে দেন’ বলে অভিযোগ। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘অনৈতিক’ কিছুই করা হয়নি।
টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি শুভজিৎ সাউয়ের বক্তব্য, “আমাদের সংগঠন বাদে অন্য কেউ মনোনয়নপত্র তুলতেই আসেনি। বাধা দেওয়ার প্রশ্নই নেই। ওরাই সন্ত্রাস করে বছরের পর বছর ক্ষমতায় ছিল। এখন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে মিথ্যা অভিযোগ করছে।” তৃণমূলের ওই ছাত্রনেতার পাল্টা অভিযোগ, “সিপিএমের নেতা-কর্মীরা জিটি রোডের মুখে দাঁড়িয়ে আমাদের ছেলেদের কলেজে আসতে বাধা দিচ্ছিল। হামলা চালায়। মারধর করে। আমাদের ছেলেরা প্রতিরোধ করে।” এসডিপিও বলেন, “দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। পুলিশই পরিস্থিতি সামলায়। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ঠিক নয়। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তা ছাড়া, কোনও পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ জমা করেনি।” কলেজের সামনে তৃণমূলের জটলা। |